কথা-কাটাকাটির পর শটগান দিয়ে গুলি করেন জাপানি হান্নান

রাজধানীর দক্ষিণখানের আইনুসবাগে রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদকে (৩৯) গুলি করে হত্যার ঘটনায় আমিনুল ইসলাম হান্নান ওরফে জাপানি হান্নানসহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার হওয়া অন্য ছয়জন হলেন- হান্নানের ছেলে, তার ভাই ও চার সহযোগী। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি শর্টগান ও গুলি জব্দ করা হয়েছে। তবে এসব অস্ত্র বৈধ কি-না তা জানাতে পারেনি পুলিশ।

হত্যার পর পরই বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুরে আইনুসবাগের ‘জাপানি কটেজ’ ভবন থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

বুধবার উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার জাপানি হান্নান বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ-জাপান মানবাধিকার সংস্থার মহাসচিব। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচনের সময় তিনি ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাপানি হান্নানের বাড়ির সামনে সোমবার (২২ মার্চ) ও মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) রাতে সীমানার কাজের জন্য বালু রাখেন আব্দুর রশিদ। বুধবার সকালে রশিদের স্বজনেরা বালু কম দেখতে পান। খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন, রাতের আঁধারে জাপানি হান্নান ও তার লোকজন বালু নিয়ে গেছেন। জিজ্ঞাসা করতে গেলে রশিদের চাচাতো ভাইদেরকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে রশিদ ঘটনাস্থলে এসে জাপানি হান্নানকে বালুর ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির এক পর্যায়ে হান্নান গুলি করে রশিদকে হত্যা করেন।

দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার মোহাম্মদ শামীম বলেন, আমিনুল ইসলাম হান্নান (জাপানি হান্নান) ও আব্দুর রশিদের মধ্যে আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল। সেই ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে আজ সকালে দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। তারপর জাপানি হান্নান তার নিজের শটগান দিয়ে গুলি করেন বলে আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় হান্নানসহ মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শটগানটিও জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে গ্রেফতার আমিনুল ইসলাম হান্নান নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে লাইভে আসেন একজন নারী। তিনি দাবি করেন, তাদের বাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ১০ মিনিট দুই সেকেন্ডের লাইভে তিনি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের দৃশ্যও দেখান। এ সময় তিনি পুলিশের সহযোগিতাও চান।

ওই নারী বলেন, আমাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আপনারা যে যেভাবে পারেন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানান। এটা দক্ষিণখান থানার পাশে চাঁদনগর পানির পাম্প বা আইনুসবাগ পানির পাম্পের পাশে।

আমিনুল ইসলাম হান্নানের ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা গেছে, তিনি জাপান–বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার মহাসচিব। স্থানীয়ভাবে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.