হিন্দুদের বেশিরভাগ বাড়িই দখল করেছে আ.লীগ নেতারা: ফখরুল

বিএনপি নয়, বরং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগই দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি দাবি করেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ বাড়িই দখল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

আজ বুধবার (২৪ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ২৪ মার্চ কালো দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এই সভার আয়োজন করে।

সিলেটে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রসঙ্গ টেনে এনে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন এই ঘটনা নাকি বিএনপি করেছে। অথচ ধরা পড়ল আওয়ামী লীগের নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার।

তিনি বলেন, দেশের চালের দাম বেড়েছে। মোট চালের দাম ৮০ টাকা, তেল, লবণের দামও বেড়েছে। কৃষক এখন পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। দেশের গরিব মানুষগুলো আরও গরিব হচ্ছে। আর ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে। উন্নয়নের নামে নেওয়া মেগা প্রকল্পগুলোতে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। এখন টিকা নিয়ে দুর্নীতি চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চায় না মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৮-১০ ঘণ্টার আগুনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১৫ জনের মতো মানুষ মারা গেছে। এগুলো হতেই থাকবে। আমরা বারবার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য বলছি। কারণ আমাদের মত দরিদ্র দেশে রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণ দেওয়া সম্ভব না। কিন্তু সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চায় না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবার বলছি রোহিঙ্গা ইস্যুটা সমাধান করেন। আপনারা করছেন না। আজ পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়নি। প্রাধানমন্ত্রীও কোনো সফর করেননি। এসব বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা শুনলে অবাক লাগে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে বাংলাদেশের সঙ্গে নাকি ভারতের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে রয়েছে। অথচ আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশে ভারত ও চীন এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছে না। এটা সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা।

এই সরকার কৌশলী সরকার, জনগণের ভোটে হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ আর ২০২১ সালের ২৪ মার্চের মধ্যে সরকারের মধ্যে কোনো ব্যবধান আছে? না নেই। এরশাদ সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। এই সরকারও গণতন্ত্রকে হত্যা করে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতায় টিকে আছে।

৯০ দশকে যেমনি ছাত্ররা আন্দোলন করে এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়েছিল। এখনও সেই কাজটি করতে হবে ছাত্রদের। ছাত্রদলকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। সবাইকে নিয়ে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া কোনো দিন ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র ফিরে আসবে না, যোগ করেন মির্জা ফখরুল।

জনগণের সরকার হলে আল জাজিরা ও রয়টার্সের প্রতিবেদনের পরই সরকার পদত্যাগ করত মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, আমাদেরকে কেউ গণতন্ত্র এনে দেবে না। আমাদের গণতন্ত্র আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। ছাত্রদেরকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ জন্য ছাত্রদলের নেতাদের সক্রিয় হতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংগঠন সক্রিয় করে কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

ঢাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান খান দুদু, বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.