বাইডেনের ১.৯ ট্রিলিয়ন করোনা প্যাকেজের চূড়ান্ত অনুমোদন

করোনায় পর্যুদস্ত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা দিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের যে প্রণোদনা বিলটি প্রস্তাব করেছিলেন, সেটি পাস করেছে কংগ্রেস।

মার্কিন নাগরিকদের করোনাকালীন ধকল কাটিয়ে উঠতে বুধবার (১০ মার্চ) কংগ্রেসে পাস হয় এই আর্থিক সহায়তা বিল। প্রতিনিধি পরিষদে ২২০-২১১ ভোটে এই বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক সাহায্য পরিকল্পনা পাস হয়। তবে কোনো রিপাবলিকান বিলের পক্ষে ভোট দেননি।

এর আগে সিনেটে অনুমোদন পায় বিলটি। এখন বাইডেনের স্বাক্ষর পেলেই তা আইন হিসেবে পাস হবে।

এই ষষ্ঠ করোনা ভাইরাস ত্রাণ বিলটি প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের জন্য এক বড় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। একজন বাদে সকল ডেমোক্র্যাট সদস্য এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, আগামী শুক্রবার নাগাদ প্রেসিডেন্ট বিলটিতে স্বাক্ষর করবেন।

প্রণোদনামূলক এই বিলটি সম্পর্কে এর আগে জো বাইডেন বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী করাই এই বিলের প্রধান উদ্দেশ্য। এখানে সেইসব কর্মজীবী মানুষদের সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে, যারা এই দেশটিকে গড়ে তুলেছেন, চালিয়ে নিচ্ছেন।’

মার্কিন নাগরিকদের সহায়তায় এ অর্থ বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ন্যান্সি পেলোসি, চাক সুমারের মতো ডেমোক্র্যাট দলীয় নেতারা।

ন্যান্সি বলেন, এ বিলটি পাশের মধ্য দিয়ে মার্কিনদের কাছে বার্তা পৌঁছে গেছে যে সহায়তা আসছে। রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককোলেন চারবার বিলটি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু দেশের নাগরিকদের জন্য এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সুখবর এ বিলটি।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। মার্কিনদের জন্য নিশ্চয়ই দিনটি আনন্দের।

তবে বিলটির ব্যাপক সমালোচনা করে রিপাবলিকান দলীয় সিনেটররা বলছেন, ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে বিলটি পাস হতে যাচ্ছে।

ম্যাককোলেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে আইনটি পাস হতে যাচ্ছে। এর চড়া মূল্য দিতে হবে দেশকে। করোনা সময়ে যাদের কাজ ছিল তাদের এই সহয়তা দেওয়া অযৌক্তিক।

বিলটিতে যা আছে
‘ম্যাসিভ ইকোনমিক এইড প্ল্যান ২২০-২১১’ নামের বিলটিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিককে এককালীন ১ হাজার ৪০০ ডলার দেওয়া হবে। পাশাপাশি, মহামারির কারণে যারা চাকরি বা কাজের ক্ষেত্র হারিয়েছেন, চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে তাদের দেওয়া হবে ৩০০ ডলার।

এছাড়া এই বিলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য ও স্থানীয় সরকারগুলোর জন্য ৩৫০ বিলিয়ন ডলার, পাবলিক স্কুলগুলোর জন্য ১৩০ বিলিয়ন ডলার, করোনা টেস্ট এবং এ বিষয়ক গবেষণার জন্য ৪৯ বিলিয়ন ডলার এবং গণটিকাদান কর্মসূচি ও টিকা বণ্টনের জন্য ১৪ বিলিয়্ন ডলার বরাদ্দ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মজুরি কাঠামোতেও পরিবর্তনের বিষয়ে বলা হয়েছে নতুন এই বিলটিতে। বর্তমানে দেশটিতে ন্যূনতম মজুরি প্রতি ঘণ্টায় ৭ দশমিক ২৫ ডলার। বিলটিতে সেটি প্রায় দ্বিগুন বাড়িয়ে প্রতি ঘণ্টা হিসেবে মজুরি ১৫ ডলার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.