নারী ব্যাংকারদের অংশগ্রহণে এগিয়ে বিদেশি ব্যাংক

দেশে ব্যাংকে চাকরিতে নারীদের অংশ্রগ্রহণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এক সময় ব্যাংকারদের মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ ১০ শতাংশের কম থাকলেও এখন তা ১৮ শতাংশের বেশি। আর নারীদের এই অগ্রযাত্রায় সুযোগ তৈরিতে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে বিদেশি ব্যাংকগুলো। এই খাতের বিদেশি ৯ ব্যাংকের ৩২ দশমিক ৫৩ শতাংশই বর্তমানে নারী কর্মী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২০ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সবশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বেসরকারি ৪১টি ব্যাংকে নারী কর্মীর অনুপাত ১৮ দশমিক ৩১ শতাংশ। এই খাতের ব্যাংকগুলোয় পুরুষ কর্মীর সংখ্যা ছিল ৯৭ হাজার ৭৩৭ এবং নারী কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৮৯৫ জন। তবে নারী কর্মীর অনুপাতের দিক থেকে এগিয়ে আছে বিদেশি ব্যাংকগুলো। এই খাতের ৯টি ব্যাংকে নারী কর্মী বর্তমান ৩২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এই ব্যাংকগুলোয় পুরুষ কর্মী দুই হাজার ৯১৪ এবং নারী কর্মী ছিল ৯৪৮ জন।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ৫৯টি ব্যাংকে মোট কর্মীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৮৩ হাজার ২০৬ জন। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৩৭৮ জন। অর্থাৎ ব্যাংকে নারী কর্মীর অংশগ্রহণ এখন ১৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। সেখানে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকে নারী কর্মীর হার ছিল ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

এ সময়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে মোট জনবল ছিল ৫০ হাজার ১৬ জন। এর মধ্যে নারী সাত হাজার ৬৩৯ জন। অর্থাৎ নারী কর্মীর অনুপাত ১৮ দশমিক ০৩ শতাংশ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তিনটি বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক-রাকাব ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক নারী কর্মীর অনুপাত ১৬ দশমিক ০৭ শতাংশ। এই ব্যাংক তিনটিতে পুরুষ কর্মী ১১ হাজার ৮০০ এবং নারী কর্মীর সংখ্যা এক হাজার ৮৯৬ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারীরা অন্য খাতের তুলনায় এই খাতে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, নিরাপদ মনে করেন। তারা অন্যান্য সুবিধার চেয়ে কর্ম পরিবেশকেই বেশি প্রাধান্য দেন, যা ব্যাংক খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করছে। বর্তমানে নারীরা তাদের দক্ষতা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তাই ব্যক্তি যোগ্যতার মাধ্যমেই ব্যাংকিং খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে।

প্রতিবেদনে ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ে পদক্রম ও বয়সভেদে নারী কর্মীদের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যায়, সূচনা পর্যায়ে নারী কর্মী অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি। গত বছর পর্যন্ত এই হার ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। মধ্যবর্তী পর্যায়ে নারী আছেন ১৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, ব্যাংকগুলোয় ৩০ বছরের কম বয়সী যেসব কর্মী রয়েছেন, তাদের মধ্যে ২০ দশমিক ৬২ শতাংশ নারী। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কর্মীদের মধ্যে নারীর হার ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এই হার ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। ব্যাংকের পর্ষদে ১২ দশমিক ২০ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ রয়েছে।

অর্থসূচক/এনএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.