মাহবুব তালুকদারের সামনেই ক্ষোভ ঝাড়লেন সিইসি

নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে সমালোচনা করে আসা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে এক হাত নিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।

তিনি বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থে ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে হেয়, অপদস্ত ও নিচে নামানোর জন্য নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যা করা দরকার সবই করে চলেছেন।

আজ মঙ্গলবার (০২ মার্চ) নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে আয়োজিত জাতীয় ভোটার দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সবার বক্তব্য শেষে সিইসি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এর আগে বক্তব্য রাখেন মাহবুব তালুকদার।

নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ (লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড) থাকছে না। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় প্রার্থী জয়ী হয়ে যাচ্ছেন। আগের রাতে ভোট হয়ে যায়। এমন নানা অসংগতি তুলে ধরে আজ মঙ্গলবার বক্তৃতা করেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার।

ইসি মাহবুব তালুকদারের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, মাহবুব তালুকদার অভ্যাসগতভাবে সারাজীবন আমাদের এ নির্বাচনে যোগ দেওয়ার পরদিন থেকে যা কিছু ইসির নেগেটিভ দিক তা পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে পাঠ করতেন। আজকেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ভোটার দিবস উপলক্ষে তিনি (মাহবুব তালুকদার) একটা রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের নির্বাচন কমিশনের স্বার্থে তিনি (মাহবুব তালুকদার) কাজ করেন না। ব্যক্তি স্বার্থে ও একটা উদ্দেশ্য সাধনের জন্য, এ কমিশনকে অপদস্ত করার জন্য যতটুকু যা করা দরকার তিনি ততটুকু করেছেন।

সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনে যিনি যোগদান করেছেন, যতগুলো সভা হয়েছে সব সময় এটা করতেন। আর একটা বছর আছে তা তিনি বলতে থাকবেন।

নূরুল হুদা বলেন, ভেবেছিলাম ভোটার দিবস হিসেবে তিনি (মাহবুব তালুকদার) কিছু বলবেন, কিন্তু তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য রাখলেন। ইসিকে কতখানি হেয় করা যায়, কতখানি নিচে নামানো যায়, অপদস্ত করা যায় তা তিনি করে চলেছেন।

কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভুলত্রুটি, এখান থেকে একটা, ওখান থেকে একটা, ডাস্টবিন থেকে একটা পুরনো কাগজপত্র বের করে একটা কিছু দাঁড় করানো সম্ভব। ইসির কার কী দায়িত্ব, কী পরামর্শ, কর্মকর্তারা কাজ কী করছেন- এগুলো করেন কিনা, এটা করলে ভালো হতো এসব প্রশ্ন করা যায়।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ‘আমার বক্তব্য’ শিরোনামে লিখিত বক্তব্যে বলেন, এক কেন্দ্রিক স্থানীয় নির্বাচনের তেমন গুরুত্ব নেই। নির্বাচনে মনোনয়ন লাভই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় নির্বাচনেও হানাহানি, মারামারি, কেন্দ্র দখল, ইভিএম ভাঙচুর ইত্যাদি মিলে এখন অনিয়মের মডেল তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার না হলে এখন যে ধরনের নির্বাচন হচ্ছে তার মান আরও নিম্নগামী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, এনআইডি অণুবিভাগের মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.