ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে গণফোরাম একাংশের নির্বাহী কমিটি

দলের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে অধ্যাপক আবু সাইয়িদকে আহ্বায়ক এবং ১৫ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে গণফোরামের জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করেছেন সংগঠনটির একাংশের নেতাকর্মীরা।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কমিটির ঘোষণা করা হয়।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার ড. কামাল হোসেন সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দেন, শনিবার গণফোরামের কোনও বর্ধিত সভা নেই।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা আগামী ২৮-২৯ মে দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল আয়োজন করার কথা জানান। একইসঙ্গে আগামী কাউন্সিল পর্যন্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২১ সদস্য বিশিষ্ট স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করেন।

এছাড়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসীন মন্টুকে আহ্বায়ক এবং অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে ২০১ সদস্য জাতীয় কাউন্সিল প্রস্ততি কমিটি করা হয়েছে। মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদকে আহ্বায়ক করে এবং ১৫ জনকে যুগ্ম -আহ্বায়ক করে ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট উৎসব উদযাপন কমিটি গঠিত হয়।

শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের মৌওলানা আকরাম খাঁ হলে গণফোরামের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ এর সভাপতিত্বে গণফোরামের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। সাংগঠনিক, রাজনৈতিক ও ত্রাণ কার্যক্রমের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক।

একাংশের নেতা লতিফুল বারী জানান, সারাদেশের ৫৬ জেলা থেকে ২৮১ জন প্রতিনিধি বর্ধিত সভায় অংশ নিয়েছেন।

সভায় দলের মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘আমরা জাতি হিসাবে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে এটা প্রত্যাশিত ছিল না। দুঃশাসনের এ বাংলাদেশে আমরা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। এই প্রেক্ষাপটে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব দলের ঐক্য চাই। রাতের ভোটে নির্বাচিত স্বঘোষিত সরকারের পদত্যাগ চাই। প্রয়োজনে দেশ রক্ষায় জাতীয় ঐক্যেরে সরকার চাই।’

সভাপতির ভাষণে আবু সাইয়িদ বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে জনগণের বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জেলখানায় লেখক-সাংবাদিকদের মৃত্যু প্রমাণ করে বন্দি অবস্থায়ও কারও জীবনের নিরাপত্তা নেই।’

সুব্র্রত চৌধুরী বলেন, ‘ভোট চুরির মধ্য দিয়ে স্বঘোষিত সরকার লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশি-বিদেশি মিডিয়ায় সরকারের গোপন কর্মকাণ্ডের তথ্য ফাঁস হওয়া শুরু হয়েছে। সরকারি সম্পদ লুটপাটের মহোৎসব চলছে। সরকারের ব্যর্থতা সর্বক্ষেত্রে দৃশ্যমান।’ এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে দেশবাসীকে সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

গণফোরামের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠিত স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা হলেন- ১. মোস্তফা মোহসীন মন্টু ২. অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ৩. অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ৪. মোকাব্বির খান (এম.পি ) ৫. জগলুল হায়দার আফ্রিক ৬.  জামাল উদ্দিন আহমেদ ৭. মহসিন রশিদ ৮. আ ও ম শফিকউল্লাহ ৯. মহিউদ্দিন কাদের ১০. মোশতাক আহমদ ১১. অ্যাড. সেলিম আকবর ১২. আইয়ুব খান ফারুক ১৩. খান সিদ্দিকুর রহমান ১৪. হাসিব চৌধুরী ১৫. অ্যাড. মো. হেলাল উদ্দিন ১৬. আব্দুল বাতেন খান ১৭. আতাউর রহমান ১৮. অ্যাড. আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর ১৯. লতিফুল বারী হামিম ২০. সাইদুর রহমান   ২১. মুহাম্মদ  রওশন ইয়াজদানী।

স্টিয়ারিং কমিটিতে নাম রাখার বিষয়ে মোকাব্বির খান বলেন, ‘আমি তো এই কমিটিতে থাকবো না। এ ধরনের কমিটি করার কোনও অধিকার নেই। নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলাপরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক। এটা নিয়ে দলের বৈঠকে আমরা আলোচনা করবো।’

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.