জামাল খাসোগিকে হত্যার অনুমোদন দেন সৌদি যুবরাজ

সৌদি আরবের ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে আটক বা হত্যা করতে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের দফতর।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের মতে জামাল খাসোগিকে আটক বা হত্যা করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সৌদি আরবে যুবরাজ বিন সালমানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে আমরা এই মূল্যায়নে পৌঁছেছি।

তবে সৌদি আরব এই প্রতিবেদনটিকে নেতিবাচক, মিথ্যা এবং অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ, যিনি কার্যকরভাবে সৌদির শাসক, তিনি বলেছেন এই হত্যা তার কোনও ভূমিকা নেই।

তবে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, এই অভিযানে সৌদি যুবরাজের যে অনুমোদন ছিল তা তিনটি কারণে বিশ্বাস করা যায়।

কারণ তিনটি হলো- প্রথমত, ২০১৭ সাল থেকে রাষ্টের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ; দ্বিতীয়ত, খাশোগি হত্যায় তার একজন উপদেষ্টার সরাসরি জড়িত থাকা এবং তৃতীয়ত, বাইরের দেশে অবস্থানরত ভিন্ন মতাবলন্বীদের দমনে সহিংস পদেক্ষপ গ্রহণে তার সমর্থন।

২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়। সৌদির একটি কিলিং স্কোয়াড টিম যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

কিন্তু প্রথম থেকেই ওই হত্যাকাণ্ডের কথা অস্বীকার করে আসছিল সৌদি আরব। পরে অবশ্য স্বীকার করতে বাধ্য হয়। এ ঘটনার পর এই প্রথম খাশোগি হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সৌদি যুবরাজের নাম প্রকাশ করলো যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগের দিন বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফোনালাপে সৌদির বাদশাহর কাছে মানবাধিকার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাইডেন।

জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্পর্শকাতর গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ হতে যাচ্ছে, এটা আগেই জানা গিয়েছিল। প্রতিবেদনে খাসোগি হত্যায় বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে আসার আভাসও ছিল। বাদশাহ সালমানকে ফোন করার আগে বাইডেন প্রতিবেদনটি পড়েছেন বলে তিনি নিজেই জানান।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.