মিয়ানমারে ‘গাড়ি নষ্ট’ অজুহাতে সড়ক অবরোধ

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে সড়কে দখল করে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন দেশটির সাধারণ জনগণ। শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করতে নানা কৌশল ব্যবহার করছেন প্রতিবাদকারীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে ‘গাড়ি নষ্ট’ অজুহাত দেখিয়ে সড়ক অবরোধ।

সেনাবাহিনীর হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করেই বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে সমবেত হয় কয়েক হাজার মানুষ। এতে অংশ নেন তরুণ-বৃদ্ধ, শ্রমিক, শিক্ষক, বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

তাদের মধ্যে অনেকেই পোশাকের ওপর লাল ফিতা পরে এবং তিন আঙুলের স্যালুট দেখিয়ে সেনাশাসনের প্রতিবাদ জানান।

একই সময় ইয়াঙ্গুনের প্রধান সড়ক এবং সেতুগুলোর ওপর হঠাৎই যানজট তৈরি হয়। তবে সেটি ছিল পুরোটাই ইচ্ছাকৃত। গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে বা তেল ফুরিয়ে গেছে অজুহাতে সড়কে দাঁড়িয়ে পড়ে শত শত গাড়ি।

এদিকে, মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর বলপ্রয়োগ করলে ‘কঠোর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে দেশটির সেনাশাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ।

এর পরপরই মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে মিয়ানমারের জান্তা সরকার জানিয়েছে, তারা বেশি দিন ক্ষমতা ধরে রাখবে না। নির্বাচন দিয়ে বিজয়ীদের হাতে নিয়মমাফিক ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলে ‘গ্যারান্টি’ দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

অবশ্য নতুন নির্বাচনের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ এখনও জানানো হয়নি। তবে অভ্যুত্থানের পরপরই এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক সরকার শাসনভার নেওয়ায় জনগণের সমর্থন আছে বলে দাবি করেছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর প্রতিক্রিয়ায় ইয়াঙ্গুনে বড় ধরনের সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানাতে সড়ক অবরোধ করেছেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।

গত নভেম্বর মাসে নিয়ানমারে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির শাসনভার নেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান। সেই সঙ্গে সু চি, মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ত এবং এনএলডির জেষ্ঠ্য নেতাদের আটক করে গৃহবন্দি করা হয়। এ ঘটনার পর পরই সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামে মিয়ানমারের নাগরিকরা।

সূত্র: সিএনএন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.