ভালোবাসা দিবসের নির্বাচনকেও ভালোবেসে ফেললাম: সিইসি

কোথাও কোথাও ভোটে সংঘাত হয়। এগুলো চলে গেলে খুশি হবো, কিন্তু যাচ্ছে না। নির্বাচনী সংঘাত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

তিনি বলেন, আজকেও আমরা চট্টগ্রাম, যশোরে কথা বলেছি। ১৪ তারিখ ভালোবাসা দিবসের নির্বাচনকেও ভালোবেসে ফেললাম। আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসির (আরএফইডি) নেতাদের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

কে এম নূরুল হুদা চলমান পৌরসভা নির্বাচনের সংঘাত প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনার দিক দিয়ে যা যা দরকার আমরা সব ঠিকভাবে দেখেছি। আশা করি, অন্তত এরপর থেকে যে নির্বাচন হবে, ভালো হবে। সুষ্ঠু হবে, সংঘাত-সংঘর্ষ হবে না।

বিগত নির্বাচনগুলোতে রক্তপাত, সহিংসতা কেন ঠিক করা গেল না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এত সংঘাত হয়েছে তা না। তবে যেগুলো হয়েছে, আমাদের কাম্য নয়। এগুলো হয় প্রার্থী ও প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিদের মধ্যে। আমাদের পুলিশ থাকে, কিন্তু একটা ঘটনা ঘটে গেলে তো কিছু করার থাকে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য থাকেন, ম্যাজিস্ট্রেট থাকেন। তারপরও এগুলো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রার্থী ও প্রার্থীদের সমর্থকদের সহনশীল থাকতে হবে। আর আমাদের প্রচেষ্টা তো আছেই। তবে এটাকে ঢালাওভাবে বলবেন না। ব্যাপকভাবে হয়েছে তা নয়। সারা নির্বাচনের মধ্যে তিন-চারটি জায়গায় এমন হয়েছে। আমরা সেটাকে সামাল দিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে যেখানে অসুবিধা হয়েছে সেখানে পুলিশি মোকদ্দমা হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ও প্রস্তুতি থাকবে, এগুলো যাতে না হয়। এগুলো তো দুর্ঘটনা, আমাদের দেশে এগুলো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আমাদের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি থাকলে বলবেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য কোনো বার্তা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা তাদের অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রাখি। প্রত্যেকটি জায়গায় র‍্যাব, বিজিব, আনসার সদস্য আছে। প্রত্যেক কেন্দ্রে ১২ থেকে ১৮ জন আর্মড পুলিশ এবং আনসার নিয়োজিত থাকবে। তাদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনাররা কথা বলেছেন। তারা আরো সুষ্ঠুভাবে তদারকি করবে। আগামী ১৪ তারিখ যে নির্বাচন আছে, সেগুলো তারা মনিটর করবে। কোনো জায়গায় খারাপ খবর পেলে, কমিনাররা কথা বলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন।

দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কে এম নূরুল হুদা বলেন, চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপের পৌরসভা রয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি ও ২৮ ফেব্রুয়ারি। মার্চে হালনাগাদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর রমজান রয়েছে। শেষ ধাপের বাদবাকি পৌরসভা ও নির্বাচন উপযোগী কিছু ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ৭ এপ্রিল করার প্রস্তাব এসেছে। এ জন্যে ১৭ ফেব্রুয়ারি কমিশন সভায় এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। সেখানে কয়টি পৌরসভা ও ইউপিতে ভোট করা যায়, তা পর্যালোচনা হবে।

কবে নাগাদ ইউপি সাধারণ নির্বাচন শুরু করা যাবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত প্রকাশের বিষয়, সিডি তৈরি ও রমজান রয়েছে। ৭ এপ্রিল কিছু হবে। তবে ঈদের পরে মধ্য মে মাসে ইউপি নির্বাচন শুরু হবে।

দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ২২ মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ছয় ধাপে চার হাজারেরও বেশি ইউপির ভোট হয়েছিল। সেবারই প্রথম দলীয়ভাবে চেয়ারম্যান পদে ভোট হয়েছিল। এবারও দলীয় প্রতীকে হবে।

অনুষ্ঠানে আরএফইডির সদস্যরা, চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.