‘দুর্নীতি বন্ধে দুদকের সুপারিশ গুরুত্ব দিচ্ছে না সরকারি দফতর’

প্রতি বছর দুর্নীতি বন্ধে একাধিক প্রতিষ্ঠানের কাছে সুপারিশ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো দুর্নীতি বন্ধে দুদকের সুপারিশগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। একারণে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মতবিনিময় সভায় দুদক বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স অ্যাগনেইস্ট করাপশন-র‌্যাকের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত দুর্নীতি বিদ্যমান। ২০১৯ সালে স্বাস্থ্য খাত, নদী দখল, ওয়াসাসহ ১৪টি খাতে দুর্নীতি চিহ্নিত করে তা বন্ধে দুদক সুপারিশ করেছিল। কিন্তু সরকারি দফতরগুলো এসব সুপারিশকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালে আমরা স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ড্রাইভ শুরু করি। কারণ সাসটেইনেবল গোল (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) পূরণে এই দুই খাতের দুর্নীতি রোধ করা দরকার ছিল। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই তার ট্যাক্স ফাইল থাকতে হবে জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতির অন্যতম খাত রাজস্ব। এটা খুবই কঠিন ও জটিল। এটা সহজ হলে সবাই ট্যাক্স দেবে। এছাড়া কালো টাকা সাদা করার নামে ঘুষের টাকা বৈধকরণ নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। ঘুষের টাকা সাদা করাটা অনৈতিক ও বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মত বিনিময় সভায় ২০১৯ সালে কমিশন কর্তৃক সম্পাদিত কার্যক্রমের বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে দুদকে মোট অভিযোগ আসে ২১ হাজার ৩৭১টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৭১০টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য নেওয়া হয়। ওই বছর মোট ২৬৩টি মামলা করা হয়েছে, চার্জশিট দেওয়া হয়েছে ২৬৭টি মামলার। ২০১৯ সালে কমিশনের মামলায় সাজার হার ৬৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে জানিয়ে ২০২০ সালে তা ৭৭ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা চাই কমিশনের মামলায় সাজার হার হবে শতভাগ।

মতবিনিময় সভায় দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুদক বিগত বছরগুলোতে মূলত প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ কৌশল পরিচালনা করছে। প্রশাসনিক কৌশলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সহজ। দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল বলেন, আমরা দিনরাত পরিশ্রম করেছি। মামলার অনুসন্ধান-তদন্তের নথি পর্যালোচনা করছি। তারপরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একারণে মামলা সাজার হার বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় দুদক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টাস এগেইনেস্ট করাপশনের (র‌্যাক) নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ ফয়েজ সাংবাদিকতার মাধ্যমেও দুর্নীতি বিরোধী প্রচারণা কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.