মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান, জরুরি অবস্থা জারি

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির রাষ্ট্রপতি উইন মিন্টকে আটকের পর দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। পাশাপাশি দেশটির বড় শহরগুলোতে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে টেলিফোন সংযোগ। এসব কিছুই সেখানে একটি সেনা অভ্যুত্থানের ভয়াবহ চিত্র ফুটিয়ে তোলে।

এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের ক্ষমতা কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লেইংয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অর্থাৎ মিয়ানমারের ক্ষমতা এখন সেনাবাহিনীর দখলে।

ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র মায়ো নিউন্ট সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট এবং অন্য শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করা হয়েছে। আমাদের ধরে নিতে হবে যে সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছে। আমি জনগণকে উত্তেজিত না হয়ে আইন অনুসারে প্রতিক্রিয়া দেখানোর আহ্বান জানাই।’

এদিকে আজ সকাল থেকেই মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিদো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। বড় শহরগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রেডিওর সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র সেনাবাহিনী পরিচালিত মায়াবতি চ্যানেলের সম্প্রচার চালু আছে। আর নির্দিষ্ট এলাকা বাদে বন্ধ রয়েছে মোবাইল ফোন পরিষেবাও।

গত বছর ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে অং সান সু চির দল এনএলডি বড় জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন। যা প্রায় মোট আসনের ৮৩ শতাংশ। অন্যদিকে সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। এমনকি রাষ্ট্রপতি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ দায়ের করে। যদিও মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন ভোট কারচুপির বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। এরপর থেকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় বসতে পারে-এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সাল পর্যন্ত মিয়ানমার সামরিক বাহিনী দ্বারা শাসিত ছিল। অং সান সু চি ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বছর গৃহবন্দী জীবন কাটিয়েছেন। এরপর ২০১৫ সালে মিয়ানমারে অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে সেনাবাহিনী ও সেনা-সমর্থিত সরকারের অবসান ঘটিয়ে সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় এনএলডি।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.