দেশ উন্নত হওয়ায় মানুষ ভোটে আগ্রহ হারিয়েছে: ইসি সচিব

ভোটদানের প্রতি নাগরিকদের অনীহা রয়েছে স্বীকার করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, হয়তো দেশ উন্নত হ‌ওয়ার সাথে সাথে মানুষও ভোটদানে আগ্রহ হারিয়েছে।

আজ বুধবার (২৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ইসি সচিব এ কথা বলেন।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে ইসি সচিব বলেন, ভালো নির্বাচন হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন হয়েছে। তবে দুটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হয়েছে, সে দুটি স্থগিত রয়েছে। অভিযোগ পেলে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে। তবে আগের তুলনায় এই নির্বাচনে কম সহিংসতা হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি‌ও কম।

তিনি বলেন, কোনো কোনো কেন্দ্র ৫০ থেকে ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কোনো কেন্দ্রে আবার ৫ ভাগ ভোটও পড়তে পারে।

মো. আলমগীর বলেন, চসিক নির্বাচনে উপস্থিতি একটু কম ছিল। কারণ আপনারা দেখেছেন যে, শুধু চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে নয়, যেকোনো বড় শহরে নির্বাচন যখন হচ্ছে বিশেষ করে ভাসমান লোকজন বেশি থাকে, বাইরের লোকজন বেশি থাকে, সেখানে একটু উপস্থিতিটা কম হয়। চট্টগ্রামে আমরা আরেকটু বেশি আশা করেছিলাম। দেখা গেছে যে, ভোটার উপস্থিতি আশার চেয়ে একটু কমই হয়েছে।

‘২০০৮ সালের আগের নির্বাচনগুলোয় ভোটার উপস্থিতি যত ছিল, তখনও তো নিশ্চয়ই ভাসমান লোক ছিল। এখন ভোটার উপস্থিতি এত কম কেন?’- এ প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এখানকার নাগরিকরা কেন যেন রাষ্ট্রের প্রতি তাদের একটা দায়িত্ব যে আছে, ভোট যে তার অধিকার, এটা তারা মনে করছেন না। ভোটের দিন তারা মনে করেন যে, কী কষ্ট করে যাব, কেন ভোট দেব, ভোট দিয়ে আমার লাভ কী- এ ধরনের মনমানসিকতা হয়ে গেছে। এটা দেখবেন যে, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এরকম হয়।

‘আমেরিকার (যুক্তরাষ্ট্র) ক্ষেত্রে দেখেন, এত উন্নত তারা, সবদিক থেকেই উন্নত। কিন্তু ভোটের ক্ষেত্রে দেখবেন ভোট দিতে যায় না বেশিরভাগ মানুষ। আমাদের দেশেও অনেকটা ওইরকম, উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনে হয় এই লক্ষণ দেখা দিয়েছে। দেশ উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিকতার বদল হয়েছে। মানুষ মনে করে, অন্যের জন্য আমি কেন কষ্ট করে ভোট দিতে যাব?’

বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপির অভিযোগের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। উপযুক্ত প্রমাণসহ অভিযোগ করা হলে বিষয়টা ভেবে দেখা হবে, ভিডিও থাকলে ভালো হয়।

এদিকে খুন, দফায় দফায় সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ভোট গ্রহণ স্থগিত, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে, বর্তমানে ভোট গণনা চলছে।

কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের জেরে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে একের পর এক সংঘর্ষের খবর আসতে থাকে। বিএনপি অভিযোগ করে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভোটকেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি পরিকল্পিতভাবে হামলা করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির দুই প্রার্থী ছাড়াও এবার চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আরও পাঁচ প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অন্যদিকে, ৩৯টি সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৩৭ জন। এবারের ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪১৭টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.