ইয়াবা আসা বন্ধ করতে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এসে আমার দেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই ইয়াবা আসা প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন সদর দপ্তর প্রশিক্ষণ মাঠে আজ বুধবার (২০ জানুয়ারি) ‘মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক সামাজিক ব্যাধি। এটি নিজের জীবনের সঙ্গে একটি পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে দিতে পারে। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা দুর্বার গতিতে চলছে। মাদক নিরোধ সম্ভব না হলে দেশের সেই উন্নয়ন যাত্রা থমকে যেতে পারে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, মাদকপাচার রোধে আইনশৃংখলা বাহিনী কঠোর থেকে কঠোরতম হচ্ছে। এ জন্য যত ধরণের প্রচেষ্টা তা অব্যাহত রয়েছে। যেন মাদকের ভয়ংকর বিস্তার রোধ করা সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই সাকসেসফুল হব, আমরা অবশ্যই সফল হব। কয়েক বছর আগেও আপনারা দেখেছেন, ধুমপান নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছিলাম। বলেছিলাম, ধুমপান বিষপান; মাদক তার চেয়েও ভয়ংকর। আমাদের এই যুদ্ধে অবশ্যই জয়ী হতে হবে এবং জয়ী হবো ইনশাল্লাহ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসময় মাদকপাচার রোধে সীমান্ত বাহিনী বিজিবিসহ আইনশৃংখলা বাহিনীগুলোকে আরও কঠোর ভূমিকা পালনের নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে। মাদক নির্মূলে কঠোর হয়ে কাজ করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে জনপ্রতিনিধি, সমাজপতি সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে শপথ নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে সমাজে যেন মাদক ও মাদক ব্যবসায়ী স্থান না পায়। এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা সম্ভব হলে মাদক নিয়ন্ত্রণে আসবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গি দমনে যেমন আমরা সফল হয়েছি, মাদক নির্মূলেও সফল হতে হবে। সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে, আমরা সফল হব। আমরা এ যুদ্ধে জয়ী হব। এজন্য একযোগে কাজ করতে হবে। অন্যথায় নতুন প্রজন্ম পথ হারিয়ে ফেলবে।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নর জবাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আরও কঠোর নিরাপত্তার লক্ষ্যে কক্সবাজার সফর করছেন বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আরও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে নোয়াখালীর ভাসানচরে একটি নতুন থানা উদ্বোধন করা হয়েছে।

এছাড়াও কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে নতুন থানার উদ্বোধনের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের নিরাপত্তার বিধান করাই সরকারের মূল লক্ষ্য।

এদিকে বিজিবি জানিয়েছে, এবার কক্সবাজারে দেশের সবচেয়ে বড় মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে এক সাথে এত বৃহৎ পরিসরে দেশের কোথাও এত বিপুল পরিমানের মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়নি। ধ্বংস করা এসব মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে গত ৩ বছরে বিজিবির বিভিন্ন সময়ের অভিযানে জব্দ করা মালিকবিহীন ১ কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৫ টি ইয়াবা, ৫ হাজার ৭৯৯ বোতল মদ, ৩৩ হাজার ৫৫৫ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৭৩৬ লিটার বাংলা চোলাই মদ, ১৫ কেজি ৭৩২ গ্রাম গাঁজা, ১৮ হাজার ৭৫০ পাতা সিডিল ট্যাবলেট ও ৫ হাজার পাতা জোলিয়াম ট্যাবলেট।

বিজিবি আরও জানিয়েছে, এসব ইয়াবা উদ্ধারের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রেখেছে বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের রামু সেক্টর। তারা ৩ বছরে মোট ৩ কোটি ১৬ লাখ ৭২ হাজার ৭৪৩টি ইয়াবা উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে মালিকবিহীন উদ্ধার ১ কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৫টি ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হবে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.