হানিফকে শিক্ষা নিতে বললেন কাদের মির্জা

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার নব নির্বাচিত মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুল আলম হানিফকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, হানিফ সাহেব আপনি কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচন থেকে শিক্ষা নেন।

তিনি বলেন, আমি ভয়কে জয় করেছি আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরের সহযোগিতায়। আমার বিজয়টা আমার কাজের ফসল। অপরাজনীতির বিরুদ্ধে আমি জাতীয় নেতাদেরকে জানিয়েছি, অপেক্ষা করছি দেখি, উনারা কী করেন। না হয় পরে আমি সব প্রকাশ করবো।

আজ রোববার (১৭ জানুয়ারি) সকালে বসুরহাট পৌরসভা অফিসে নির্বাচনপরবর্তী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বলেন, আমার বিজয়টি আমার কাজের ফসল। আমাদের নেতারা, বড় নেতাদের তেল মারে, তাদের এলাকার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। গরিব বাবা-মা মেয়েকে বিয়ে দিতে পারছেন না, তারা কী তাদের ১০ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন। একটা মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে, তাদের কি কোনো সহযোগিতা করছেন। এদের কি এলাকার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ আছে।

তিনি আরও বলেন, ভোটের সময় আসলে কিছু কিছু নেতা টাকা-পয়সা দিয়ে নমিনেশনটা নেত্রীকে সুপারিশ করে নেয়। এরা নমিনেশন নিয়ে আর এলাকার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেন না। তারা এলাকার কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে থাকেন না, উন্নয়নের সঙ্গে থাকেন না। তারা কোনোটার সঙ্গেই নেই।

আবদুল কাদের মির্জা বলেন, অনেক এমপি আছেন, নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করেন না। শত ভাগ না পারলেও অন্তত ৭০ থেকে ৮০ ভাগ যদি প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করতেন, তা হলে আওয়ামী লীগ এখন যে নির্বাচনগুলো হচ্ছে সব নির্বাচনই জয়ী হতো।

তিনি বলেন, আজ দাগনভূঁইয়া ও বাংলাদেশের যে নির্বাচনগুলো হয়েছে তা দুঃখজনক। আর এ পরিবর্তনগুলো কে আনবে? খালেদা জিয়া এখন সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে বাসায় শুয়ে আছেন, ছেলে (তারেক রহমান) হলো দুর্নীতিবাজ, বাংলাদেশে এলেও তার পক্ষে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আর জামায়াতে ইসলামী আছে, তাদের কোনো রেজিস্ট্রেশন নাই। জামায়াত হলো কোল বালিশ; কোল বালিশ হিসেবে আরও ৫০ বছর থাকতে হবে, তাদের ক্ষমতায় আসার কোনো সুযোগ নেই।

তারা এ পরিবর্তন আনতে পারবে না। এ পরিবর্তন আনতে পারবে একমাত্র বাংলার প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তার সেই সৎ সাহস আছে। সে প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করেন বলে জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে কাদের মির্জা বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালীতে ৩-৪টা আসন আমাদের। ওবায়দুল কাদের সাহেবের উন্নয়ন এবং ওনার নীতিনৈতিকতার কারণে এখানে আগের চাইতে উনার জনসমর্থন অনেক বেড়েছে। উনি এখানে নির্বাচিত হবেন।

তিনি বলেন, হাতিয়ায় আমাদের সাংগঠনিক অবস্থা মোটামুটি ভালো। সেখানেও অপরাজনীতি আছে আমি অস্বীকার করব না। সেখানে যে খুনাখুনির রাজনীতি এটিও আমরা ঘৃণা করি। বেগমগঞ্জের আসনটা বর্তমান এমপি সাহেব মোটামুটি চালাচ্ছেন। চাটখিল-সোনাইমুড়ী আসনে ইব্রাহীম সাহেব অনেক ভালো চালাচ্ছেন। যতটুকু তথ্য আমি নিয়েছি, এর বাহিরে বৃহত্তর নোয়াখালীতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় আর একটিতেও আওয়ামী লীগ জয় পাবে না।

এসব আসনে নির্বাচিত হতে হলে তারা যে অপকর্ম করে, এগুলো থেকে সরে আসতে হবে। টেন্ডারবাণিজ্য, চাকরিবাণিজ্য থেকে আরম্ভ করে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ করাসহ যত অপকর্ম তারা করেন, এগুলো তারা ভালোভাবে জানেন, এগুলো বন্ধ করতে হবে বলে জানান কাদের মির্জা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকার দু-একজন কুলাঙ্গারের সহযোগিতায় ফেনীর দাগনভূঁইয়ার ছেলেরা আমার বাড়িতে চারবার আক্রমণ করেছে। আমি নিজাম হাজারীকে বলে কোনো বিচার পাইনি। এরা সেখানে কি করে খোঁজখবর নিয়ে দেখেন।

বসুরহাট পৌরসভার মেয়র বলেন, স্বপন মিয়াজী সেখানে নমিনেশন নিয়েছে, খোঁজখবর নিয়ে দেখেন তারা সেখানে কি করে। এ বিয়ষগুলো আমাদের নেতা (ওবায়দুল কাদের) বিবেচনায় আনা দরকার। যেহেতু ওনার এলাকা। উনি শুধু বৃহত্তর নোয়াখালীর নেতা নয়; চট্টগ্রাম বিভাগে আমার মনে হয় এই প্রথম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছে। এ বিভাগে আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন না। এ বিভাগে ওনার (ওবায়দুল কাদের) দায়িত্ব আছে।
এ বিষয়গুলোর ব্যাপারে তাকে (ওবায়দুল কাদের) নজর দিতে হবে। তাকে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) কাছে সঠিক তথ্যটা তুলে ধরতে হবে।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব নীতিনৈতিকতা নিয়ে রাজনীতি করে। এদের সঙ্গে লড়াই করার মতো বা এদের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থানে যাওয়ার মতো শারীরিক অবস্থাও নেই আর ওই মানসিকতাও তিনি পোষণ করেন না।

অস্ত্রের রাজনীতি কোম্পানীগঞ্জ থেকে চিরবিদায় নেবে। বিরোধী দলের যাদের কাছে অস্ত্র আছে, সে বিষয়ে আমি তাদের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করব। তাদের দুজনের কথা আমি বিএনপি প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরীকে জানিয়েছি, যোগ করেন কাদের মির্জা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.