ভারতীয় পেঁয়াজে আগ্রহ কম, চাহিদা দেশির

দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকার পর দেশের কয়েকটি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলেও স্থানীয় বাজারে সরবরাহ নেই। চাহিদার তুলনায় আমদানি কমের অজুহাতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাইকারদের। তাই পেঁয়াজ না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন তারা।

তবে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি করে স্বস্তিতে নেই আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে এখন খুব বেশি চাহিদা নেই ভারতীয় পেঁয়াজের।

বাজারে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি, দামও কম। আর তুলনামূলক বেশি দাম হওয়ায় মানুষ ভারতীয় পেঁয়াজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

স্থানীয় বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের গুণগত মান ও চাহিদা ভালো থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা নেই বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। তারা জানান, দুই দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়ে ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, আমদানিকৃত পেঁয়াজ কেজিতে ৮ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। ফলে আমদানি করা পেঁয়াজের বিক্রি একেবারেই কমে গেছে।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। গত বছরের শেষদিকে এসে (২৯ ডিসেম্বর) এ রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় দেশটি। এরপর চলতি বছরের শুরুতে (২ জানুয়ারি) থেকে অন্যান্য বন্দরের মতো সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়েও ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে শুরু করে দেশে।

পেঁয়াজের বড় পাইকারি বাজার সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজার। সেখানকার আড়তদার মেসার্স সাকিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আক্তারুজ্জামান আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ পাইকারি দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭-২৮ টাকায় আর খুচরা প্রতি কেজি ৩০ টাকা। আর মেহেরপুর জেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম আরও কম। সেগুলো বিক্রি হচ্ছে পাইকারি ২০-২২ টাকা ও খুচরা ২৫ টাকা। হল্যান্ডের পেঁয়াজ পাইকারি ১৯-২০ টাকা, খুচরা ২০-২১ টাকা। কিন্তু, ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি ৩৬-৩৭ টাকা ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

তিনি আরও জানান, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে না। এগুলো কিনে আড়তে রেখে লোকসানে পড়েছি। ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৯ টাকা দরে কিনে আমি বিক্রি করছি ৩৫ টাকায়। তবুও মানুষ কিনছে না। আড়তে ২০০ বস্তা পেঁয়াজ নিয়ে এখন বিপদে পড়েছি।

ভোমরা বন্দরের ব্যবসায়ী বিপ্লব ট্রান্সপোর্টের স্বত্বাধিকারী রতন বলেন, এ পর্যন্ত পাঁচ ট্রাক ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি করেছি। তবে বাজারে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা নেই বললেই চলে। ভারত থেকে কিনে এনে খরচ ধরে বিক্রি করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, দেশি পেঁয়াজের থেকে কেজি প্রতি ৮-১০ টাকা বেশি দাম পড়ছে। এতে ক্রেতারা দেশি পেঁয়াজেই বেশি ঝুঁকছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, দেশে যখন পেঁয়াজ উৎপাদন মৌসুম চলছে ঠিক তখনই আবারও ভারত থেকে আসছে পেঁয়াজ। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মৌসুম নয় এমন সময় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে কৃষকরা লাভবান হতে পারতেন আর দামও নিয়ন্ত্রণে থাকত।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.