দেশে প্রথম করোনা প্রতিরোধী কেএন-৯৫ মাস্ক আনলো জেএমআই

দেশে প্রথম কোভিড-১৯ প্রতিরোধী কেএন-৯৫ মাস্ক বাজারে নিয়ে এলো চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ। গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফেক্চারিং লিমিটেড এই মাস্ক উৎপাদন করছে। এই মাস্ক প্রতিটি ১০০ টাকায় বিক্রি করবে প্রতিষ্ঠানটি।

আজ সোমবার (০৪ জানুয়ারি) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে নতুন এই মাস্কের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, করোনা মহামারি বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হলেও তা যথাযথভাবে মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে সংগঠিত করতে পেরেছেন। তার দূরদৃষ্টির মাধ্যমে প্রতিটা ক্ষেত্রে কোথায় কি অভাব রয়েছে তা পয়েন্ট আউট করতে পেরেছেন এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তা করতে পেরেছি বলে মাথা তুলে দাঁড়াতে পেরেছি। তাই কোভিড-১৯ আমাদের উপর সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি।

করোনা মোকাবিলায় প্রথম থেকেই জেএমআই গ্রুপ কাজ করেছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রথম কেএন-৯৫ মাস্ক তৈরিতে জেএমআই গ্রুপ সফল হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আগে খাদ্যশস্য আমদানি করতাম, এখন আমাদের আর আমদানি করতে হয় না। আমরা সব দিকেই এগিয়ে চলছি। আর এখন আমরা ওষুধও রফতানি করি যেটা কোনদিনও কল্পনা করতে পারতাম না। বর্তমানে বাংলাদেশ ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে, এগিয়ে যাচ্ছে। খুব শিঘ্রই আমরা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হব।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি অতিথির বক্তব্যে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে যারা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যে জেএমআই অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান।

কেএন-৯৫ মাস্ক প্রসঙ্গে জেএমআই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, এই মাস্কটিতে তিন স্তরের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ফিল্টার পেপারসহ মোট ৫টি সুরক্ষা স্তর রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশ ও বিদেশের পরীক্ষাগারে মাস্কের মান ও যোগ্যতা পরীক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে আমদানি করা চীনা কেএন-৯৫ মাস্ক দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩০০ টাকায়। একই মানের মাস্ক ১০০ টাকায় বিক্রি করবে আমাদের প্রতিষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান জাবেদ ইকবাল পাঠান বলেন, করোনাকালে জেএমআই গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ডিএনএ সল্যুশনের ল্যাবের আরটিএ মেশিনে প্রায় ১০ হাজার পুলিশ সদস্যের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আবার সরবরাহ করা হয়েছে কোভিড চিকিৎসার ওষুধপত্র। এই ল্যাবে করোনার জিনোম সিকোয়েন্স করেছেন বেশ কয়েকজন গবেষক ও শিক্ষক, যারা ইতোমধ্যে ভাইরাসের গতিপ্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিহ্নিত করতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, গত বছরের এপ্রিলের পর দেশে যখন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর হার বাড়তে শুরু করেছিল, তখন আন্তর্জাতিক মানের ফেস মাস্কসহ নানা সরঞ্জাম তৈরি করে আমরা সরকারকে সহায়তা দেই। যা ওই দুঃসময়ে দেশের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দেওয়া সম্ভব ছিল না।

প্রসঙ্গত, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট চীনের প্রযুক্তি ব্যবহার ও স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে দেশে কেএন-৯৫ মাস্ক উৎপাদন করবে। তবে কোম্পানিটি একে মাস্ক না বলে রেসপিরেটর হিসেবে অভিহিত করছে। কোম্পানিটির মাস্কের নাম জেএমআই রেসপিরেটর।

উল্লেখ, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফেক্চারিং লিমিটেড বুকবিল্ডিং পদ্ধতির গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিল। কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর কাছে আবেদন করেছিল। তবে সিকিউরিটিজ আইনলংঘনসহ বিভিন্ন কারণে বিএসইসি গত বছরের ২০ জুলাই কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিল করে দেয়।

অর্থসূচক/এনএইচ/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.