রাজনীতিবিদরা ভোট ডাকাতির রেকর্ড ভাঙতে চান: ফখরুল

দেশে গণতন্ত্রের কথা বলা হয়, কিন্তু আসলে গণতন্ত্র নেই; একদলীয় শাসনব্যবস্থায় গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে চলছে দেশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আমরা এ কোন সমাজে এলাম, কোন রাষ্ট্রে বাস করছি— যেখানে আমাদের রাজনীতিবিদরা ভোট ডাকাতির রেকর্ড ভাঙতে চান!

আজ শনিবার (০২ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

কবি প্রফেসর আব্দুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে ও শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভোট ডাকাতির যদি রেকর্ড ধরা হয় তাহলে বিএনপির রেকর্ড নাকি কেউ ভাঙতে পারবে না। তিনি কি এটা ভাঙতে চান? তারা এটা ভাঙতে চান বলেই ২০১৮ সালে চরম ভোট ডাকাতি করেছেন ভোটের আগের রাতে। এ কোন সমাজে আমরা এলাম। এ কোন রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি, যেখানে আমাদের রাজনীতিবিদরা বলছেন— তারা ভোট ডাকাতির রেকর্ড ভাঙতে চান। এভাবে এগোতে থাকলে আমরা কোনদিনই ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার যে স্বপ্ন ছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে পারব না।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমরা একটা দুঃসময়ে বাস করছি। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা পৃথিবী দুঃসময় পার করছে। একদিকে করোনা ভাইরাস মহামারির আগ্রাসন। অন্যদিকে গণতন্ত্র মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদ, একনায়কতন্ত্র এমনভাবে বেড়ে উঠছে, সেই সঙ্গে দাম্ভিকতা, অহঙ্কার সাধারণ মানুষকে অবজ্ঞা— এটা যেন বিশ্ব রাজনীতির একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দেখার জন্য। কিন্তু বার বার আমাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। নতুন বছরে আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর হতে যাচ্ছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ৫০ বছর পরেও আমরা বুক ফুলিয়ে বলতে পারছি না আমরা স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে বাস করছি। এখানে গণতন্ত্র আছে, আমার কথা বলার অধিকার আছে— এ কথা আমরা বলতে পারছি না। এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে? বলা হয় দেশে সব আছে— সরকার, গণতন্ত্র, সংসদ আছে কিন্তু মানুষের অধিকার নেই। এ দেশে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, গতকাল পত্রিকায় বেরিয়েছে গত বছর ৩শ’ জনকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের বিরল প্রজাতির রাজনীতিবিদ যারা হারিয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ। যারা রাজনীতিকে সত্যিকার অর্থেই জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত করেছে। তারা নিজেদের ভাগ্য বৃত্ত পরিবর্তনের জন্য রাজনীতিতে যাননি। চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ তাদের একজন। তিনি শুধু ফরিদপুরের নেতা বলে মনে করি না। তাকে জাতীয় নেতা হিসেবে দেখেছি, জাতীয় নেতা হিসেবে দেখতে চাই।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.