নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বেতগাড়ি বাজারে ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক নামে একটি লাইসেন্সবিহীন ভুয়া ক্লিনিকে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনকালে নাইসমিন আক্তার সুমি (২০) নামে এক প্রসূতি মারা যাওয়ার পর অবশেষে ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। রোববার বেলা ১২টার দিকে নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধি রানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. নাজমুল হোসেন সরদার এবং রানীনগর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে রানীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুল ইসলাম পাটোয়ারি ক্লিনিকটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেন। নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. মো. আলাউদ্দিন জানান, ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক নামে লাইসেন্সবিহীন ভুয়া ক্লিনিকটি আপাতত সিলগালা করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, উপজেলার আতাইকুলা গ্রামের প্রবাসী জামেদ আলীর স্ত্রী প্রসূতি সুমিকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে ওই ক্লিনিকে ভর্র্তি করা হয়। রাজশাহীর ডাক্তার অপারেশন করবে এ কথা বলে ভর্র্তি করা হলেও ভর্তির কিছুক্ষণের মধ্যে ওই ক্লিনিকের মালিক ও ওষুধ বিক্রেতা কথিত ডা. আব্দুল বারিক নিজেই অপারেশন করেন। ফলে অপারেশন টেবিলেই সুমি মারা যায়। ওই অবস্থায় লাশ ফেলে ক্লিনিকের মালিক, কথিত ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা পালিয়ে যায়। শুক্রবার রাতে নিহত প্রসূতি সুমির বাবা বাদি হয়ে ক্লিনিকের মালিক, ডাক্তার, নার্সসহ ৭ জনকে আসামি করে রানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা হলেন, ক্লিনিকের ৩ মালিক যথাক্রমে কথিত ডা. আব্দুল বারিক, তালাশ মৃধা, আলআমিন, ক্লিনিক ভবনের মালিক কলিম উদ্দিন ও তার ছেলে রেজাউল ইসলাম রেজা, কর্মচারী জুয়েল ও নার্স রুমা আক্তার। শনিবার দুপুরে সুমির লাশের ময়না তদন্ত নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। নিহত সুমির চাচা সমাজকর্মী মো. মিজানুর রহমান মিঠু, আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, একটি মহল মানুষ হত্যাকারী ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের মোটা অংকের টাকা খেয়ে এই ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার পায়তারা করছে। কিন্তু তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হবে না। তিনি অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার দাবি করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রানীনগর থানার এস আই শাহিন মো: অনু ইসলাম জানান, আসামি গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ এর জোড় তৎপড়তা অব্যাহত রয়েছে। পালিয়ে থাকায় আসামিদের গ্রেপ্তারে বিলম্ব হলেও খুব শিগগির আসামিদের গ্রেপ্তার সম্ভব হবে।
এআর