ভারতের পাশাপাশি চীন ও মিয়ানমারকেও ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের একটি হোটেলে চট্রগ্রাম চেম্বার আয়োজিত ‘বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার (বিসিআইএম) ইকোনোমিক করিডোর’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে এককভাবে কোনো দেশ অর্থনৈতিক উন্নতি করতে পারে না। সড়ক, রেল ও নৌ পথে বাংলাদেশ ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার মতো সক্ষমতা অর্জন করার পর শুধুমাত্র ভারতকে নয় চীন ও মিয়ানমারকে এ সুবিধা দেওয়া হবে।
গ্যাস আমদানি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, মায়ানমার থেকে গ্যাস আমদানি করতে দেশটির খনিজ সম্পদ মন্ত্রী সাথে আলোচনা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, দেশটির সমুদ্র এলাকায় নতুন কোনো গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পেলে তারা আমাদের প্রস্তাব দিবেন। যদিও ২০০৫ সালে সহজ শর্তে বাংলাদেশে গ্যাস সংযোগ দিতে চেয়েছিল মায়ানমার। তখন চার দলীয় জোট সরকার তাদের অজ্ঞতার কারণে প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেয়।
সেমিনারে চার দেশের প্রতিনিধিরা জানান, বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মায়ানমার এ চারটি দেশকে নিয়ে অর্থনৈতিক করিডোর চালু করতে ইতোমধ্যে সরকারিভাবে সমীক্ষার কাজ চলছে । যা আগামি বছরের শুরুর দিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিবে।
সেমিনারে চার দেশের প্রতিনিধিরা বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠী খনিজ সস্পদ ও অর্থের স্বমন্বয় করলে আগামিতে এ অঞ্চল অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে পরিণত হবে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব সড়ক, রেল ও নদীপথের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরের ক্ষমতা বাড়ানো ও গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপন এর উপরও জোর দেন বক্তারা।
ভারতের সহকারি হাই কমিশনার সনদীপ চক্রবর্তী বলেন, করিডোর হচ্ছে আধুনিক বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সম্ভাবনার দ্বার। চার দেশের মধ্যে এ করিডোর চালু করতে ভারতের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন ভারতীয় দূতাবাসের এ কর্মকর্তা।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন বলেন, চীনের ক্রমবর্ধমান পূঁজি ও বিকাশমান অর্থনীতির স্বার্থেই করিডর প্রয়োজন । আগামি পাঁচ বছরে বহির্বিশ্বে চীন ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। করিডোর চালু হলে চীনের বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম। করিডোর চালু করতে বাংলাদেশকে প্রযুক্তি, অর্থ সহযোগিতার পাশাপাশি গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরিতে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন দেশটির রাষ্ট্রদূত।
করিডোর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, করিডোরের জন্য বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। এজন্য প্রয়োজনীয় মহাসড়ক ও আবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হলেই করিডোর দেওয়ার কথা চিন্তা করবে সরকার।
আলোচনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও ভারত, চীন ও মিয়ানমারের দূতাবাস কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী, পরিকল্পনাবীদ, ব্যবসায়ী ও গবেষকরা অংশ নেন।
এমএস/সাকি