৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের

চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং ব্যর্থতা ঢাকা পড়েছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের চতুর্থ দিনের ইনিংসে। এ দিন সাকিব আল হাসানের বলে ফিরে যাওয়ার আগে হাফ সেঞ্চুরি করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। তার হাফ সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার লিডও পাঁচশ ছাড়ায়। সাত উইকেটে ১৫৭ রান তুলে শ্রীলঙ্কাও ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ৫১১ রান।

বাংলাদেশের ইনিংস সতর্কতার সঙ্গেই শুরু করেন দুই ওপেনার জাকির হাসান এবং মাহমুদুল হাসান জয়। লঙ্কান পেসারদের আক্রমণে দুইজন অবশ্য স্বস্তিতে ছিলেন না একেবারেই। তবে বিপদও ঘটেনি শুরুতে। ষষ্ঠ ওভারে ওপেনিং জুটি প্রায় ভেঙেই দিয়েছিলেন প্রবাথ জয়সুরিয়া! তবে কুশল মেন্ডিসের ব্যর্থতায় বেঁচে যান জাকির। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলটি জাকিরের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে চলে যায়। যদিও সেটি গ্লাভসে লুফে নিতে পারেননি লঙ্কান উইকেটরক্ষক।

উইকেট না হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেলেও ফিরে এসেই বিদায় নেন জয়। প্রবাথের জোরের ওপর করা আর্ম ডেলিভারিটি কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন তরুণ এই ওপেনার। ৩২ বলে তিনটি চারে ২৪ রান আসে তার ব্যাটে। সিরিজে এটিই তার সর্বোচ্চ রান।

১০ রানে জীবন পাওয়া জাকিরও বিদায় নেন দ্রুত। বিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরে করা ডেলিভারিটি খোঁচা দিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন ৩৯ বলে ১৯ রান করা জাকির। দলীয় সংগ্রহ পেরোতেই ২ ওপেনারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৯৪ রানে নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অধিনায়কের ব্যাটে আসে ৫৫ বলে ২০ রানের ইনিংস। এটিই সিরিজে তার সর্বোচ্চ রান। লাহিরু কুমারার সোজা যাওয়া ডেলিভারি ভুল লাইনে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন শান্ত। মুমিনুল হকের সঙ্গে তার জুটি অবশ্য ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছিল।

তারপর মুমিনুলের সঙ্গে হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। এ দিন বেশ ইতিবাচক ভঙ্গিমায় খেলছিলেন মুমিনুল। যদিও ৫৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের বলেই ফিরে যান টেস্ট বিশেষজ্ঞ এই ব্যাটার। ক্যারিয়ারে এটি তার ১৮ নম্বর হাফ সেঞ্চুরি।

প্রবাথের লেগ স্টাম্পে তাক করা ডেলিভারিটি সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন মুমিনুল। তার বিদায়ে সাকিবের সঙ্গে ৩৮ রানের জুটিটি ভাঙে। দ্বিতীয় সেশনে ২৬ ওভারে ৯৫ রান করতে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন বাংলাদেশের চার ব্যাটার।

এদিকে টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটি ৪১৮ রানের। ম্যাচটি জিততে হলে ইতিহাসই গড়তে হবে বাংলাদেশকে। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৪১৩ রান। ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এমন সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। আগের তিন ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা দাপট দেখালেও সেভাবে কিছু করতে পারেননি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ব্যর্থতা ঝেড়ে এই ইনিংসে রানের দেখা পেলেন তিনি। স্লিপে শাহাদাত হোসেন দিপু ক্যাচ নিতে পারলে হয়ত ৭ রানে থামতেন ম্যাথিউস।

তবে চতুর্থ দিন সকাল থেকেই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতে থাকেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। চারটি চারে ৬৭ বলে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ম্যাথিউস। ১০৯ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার ৪১তম হাফ সেঞ্চুরি। সাকিব আল হাসানের নিচু হওয়া টার্নিং ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়ার আগে ৭৪ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাথিউস। চতুর্থ দিন সকাল থেকে আরেক প্রান্তে প্রবাথ জায়াসুরিয়াও সাবলীল ব্যাটিং করেছেন। ইনিংস ঘোষণার আগে ৬৭ বলে ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। সঙ্গে বিশ্ব ফার্নান্দো ছিলেন ১৬ বলে ৮ রান নিয়ে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.