ওয়্যারলেস বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ল্যাপটপ বা সেলফোন কিংবা গাড়িতে সরাসরি বিদ্যুৎ সরবরাহ অথবা ব্যাটারি রিচার্জ করার পন্থা উদ্ভাবন নিয়ে প্রযুক্তিবিদরা কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরেই। চূড়ান্ত সাফল্য এখনও আসেনি । তবে তাদের দাবি, আর কয়েক বছরের মধ্যে কোনো রকম তার ছাড়াই মোবাইল ফোন, গাড়ি, অথবা কোনো রিচার্জেবল ব্যাটারিকে চার্জ দেওয়া সম্ভব হবে ।
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ধারণাটি খুব বেশি নতুন নয়। প্রায় ১০ দশক আগে এই ধারণা দিয়েছিল সার্বিয়ার বংশভুত যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী, পদার্থবিদ নিকোলা তেসলা। তার ধারণাকে কিভাবে বাণিজ্যিকভাবে প্রসার ঘটানো যায়, এখন সেই চেষ্টা করছে ওয়াইট্রিসিটি নামক প্রযুক্তি কোম্পানিটি।
সম্প্রতি কোম্পানিটি জানিয়েছে, বাস্তবে রূপ দেয়ার খুব কাছাকাছি চলে গেছে তারা। শেষ পর্যন্ত যদি সাফল্য ধরা দেয় তাহলে যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে তারের মাধ্যমে ব্যাটারি রিচার্জের সুযোগ নেই অথবা ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে ওয়্যারলেস রিচার্জিং ব্যবস্থায় ল্যাপটপ, সেলফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে ৷
ওয়াইট্রিসিটির নির্বাহী প্রধান এরিক গিলার জানান, তেসলার ধারণা সম্প্রসারনের চিন্তা আসে এক প্রফেসরের কাছ থেকে। এক রাতে ওই প্রফেসর ও তার স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। কিন্ত মধ্যরাতে তার স্ত্রীর ফোনে কল আসে। এর কিছুক্ষণ পর ফোনের চার্জও শেষ হয়ে যায়। এমন সময় দেওয়ালে ক্যাবল ব্যবস্থাও নষ্ট হয়ে যায়। তারই পরিপেক্ষিতে তারবিহীন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রসারের ধারণা করেন তিনি।
গিলারের ভাষ্য, কোনো ধরণের তার ছাড়াই আমারা এই বিদ্যুত ব্যবস্থা স্থানান্তর করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, তারবিহীন এমন একটি ব্যবস্থার মধ্যে বসবাস করবো এমনটা বাস্তবে আমরা কখনও চিন্তা করে দেখিনি।
কোম্পানিটি বলছে, ওয়্যারলেস প্রক্রিয়ায় ৬০ ওয়াটের একটি বাল্ব জ্বালায় তারা। যার বিদ্যুৎ উৎস ছিল তিন ফুট দূরে৷ কোনো বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ ছিল না ৷ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল ৷ একদিকে বৈদ্যুতিক বাল্ব, মাঝখানে তিন ফুট ফাঁকা, এর পর বিদ্যুতের উৎস ৷ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা গেছে ৷ এতে বিদ্যুতেরও সাশ্রয় হয়েছে বলে জানায় তারা। এখন এটিকে কিভাবে দুরবর্তী স্থানে নিয়ে যাওয়া তা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে তেসলা।
গবেষকরা বলছেন, খুব শিগগরই এর সুফলতা ভোগ করতে পারবেন তারা। আর এটি যদি সত্যি বাস্তবে পরিণত হয়, তবে শেষ হবে তার বহনের বিড়ম্বনা। কেটে যাবে সকেটের ঝুকিপূর্ণ অবস্থা।
সূত্র: ইয়াহু নিউজের
এস রহমান/