গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আগামী সপ্তাহে ওই কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। এর মধ্যে থাকবে নিজ নিজ অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে গৃহকর্মী ও তাদের নিয়োগকর্তাদের সচেতনতা বাড়ানো। খবর আরব নিউজের।
এছাড়া প্রথমবারের মত গৃহকর্মীরা তাদের মাতৃভাষায় নিজেদের সমস্যা ও অভিজ্ঞতার কথা জানাতে পারবেন সরকারের প্রতিনিধিদের। এর মধ্য দিয়ে ভাষাজনিত সমস্যা আর থাকবে না।
এদিকে প্রথমবারের মত মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এ দেশটিতে নারী গৃহকর্মী পাঠাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রাথমিকভাবে বিনা খরচে প্রতিমাসে ১০ হাজার নারী গৃহকর্মী সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। এই লক্ষ্যে দেশের ৬৪টি ট্রেনিং সেন্টারে প্রায় ২০ লাখ নারীকে এই কাজে প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই দেশটিতে নারীকর্মী পাঠানো শুরু হবে।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘোষিত কর্মসূচিতে গৃহকর্মীদের অধিকারগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। যাতে তারা এ বিষয়ে সচেতন হতে পারে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করবে মন্ত্রণালয়। তাদেরকে গৃহকর্মীদের প্রতি তাদের দায়িত্ব কর্তব্য সর্ম্পকে সচেতন করে তোলা হবে। যাতে তারা আরো দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারেন।
মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়,গৃহকর্মীদের অধিকারগুলোর মধ্যে তাদের স্বাস্থ্যগত বিষয়সহ চিকিৎসা ভাতা এবং ছুটির বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।এছাড়া শ্রম বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য রিক্রুটমেন্ট অফিসার এবং কমিশনকেও নির্দেশ দেয়া হবে।
এ মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে,কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার থেকে আটটি ভাষায় শ্রমিকদের এই সেবা দেয়া হবে। কর্মীদের কোন অভিযোগ থাকলে কিংবা তারা কোন নির্যাতনের শিকার হলে তারা যাতে কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের মাতৃভাষায় অভিযোগ করতে পারে তাই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন,এ প্রোগ্রামের মধ্য দিয়ে শুধু গৃহকর্মীরাই লাভবান হবেন না, পাশাপাশি তাদের নিয়োগকর্তারাও সচেতন হবেন। তিনি আরো বলেন,যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর বাস্তবায়ন করা হবে।
এছাড়াও জেদ্দায় শ্রীলঙ্কা কনসোলের প্রথম সচিব এমবিএম জারক বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর শ্রমমন্ত্রণালয় কর্মীদের অধিকার রক্ষায় ভাল পদক্ষেপ নিয়েছে।এ উদ্দেশ্যে তার সরকার ইতোমধ্যেই স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছে। এ স্মারকলিপিতে একদিকে যেমন কর্মীদের স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে তাদের সচেতনতার কথা বলা হয়েছে তেমনি অন্যদিকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথাও বলা আছে।
সৌদির রিক্রুটমেন্ট অফিসার আলী আল কুরায়েসি বলেন, দেশটিতে ১০ লাখেরও বেশি গৃহকর্মী আছে। তিনি জানান,কর্মীদের অধিকার রক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতেই তার দেশ অন্য দেশের শ্রমমন্ত্রীদের সাথে চুক্তিটি করেছে।
এছাড়াও তিনি শ্রমিকদের চিকিৎসা,সময়মত তাদের বেতন পরিশোধ করা এবং দীর্ঘ সময় শ্রমিকদের কাজ না করার উপরও জোর দেন।