আগামি ২৫ জানুয়ারি থেকে ফরিদপুরে শুরু হচ্ছে বহু প্রতিক্ষার জসীম পল্লীমেলা। তাই ১৫ দিনব্যাপী অয়োজিত এ মেলাকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে উৎসাহ আর উদ্দীপনার। এখন চলছে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা আর সাজানোর কাজ।
অপরদিকে অপরিকল্পিতভাবে কবির বাড়ির দক্ষিণের খোলামাঠ ভরাট করে জসীম উদ্দীন সংগ্রহশালা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে কবির বাড়ির নান্দনিকত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের।
সর্বস্তরের মানুয়ের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের ফরিদপুরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুরের বাড়িটি ঘিরে দর্শনার্থীদের পদচারণায় সরোব থাকে বছরজুড়েই। আর বছরের শুরুতেই কবির জন্মদিন উপলক্ষে বেড়ে যায় দর্শনার্থীদের আনাগোনা। যেন এই দিনটির জন্যই দীর্ঘ একটি বছরের অপেক্ষা। দূর-দূরান্ত থেকে আসে কবি ও মেলাপ্রেমীরা। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এ বছর কবির জন্মদিন ১ জানুয়ারি মেলার আয়োজন করা হয় নি।
বইপুস্তক পড়ে কবির প্রেমে পড়া অনেকেই আসছেন কবির বাড়ি দর্শনে। কবির বাড়িতে এসে বিমোহিত হচ্ছেন তার (কবির) জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পেরে।
দর্শনার্থীদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা আর হানাহানির কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এমনি সময়ে মেলার আয়োজন স্বস্তি এনেছে সর্বস্তরের মানুষের মনে।
শিল্পী শামীমা আক্তার বলেন, কবির লেখা গানের প্রেমে পড়ে অনেকেই এখন তার গানের পূজারী। তিনিও নিজের জীবনকে কবির গানের সাধনায় নিয়োজিত করেছেন বলে জানান।
বাউল শিল্পী পরিমল বয়াতি জানান, জসীম পল্লীমেলা একত্রিত করেছেন বাউল কবিদের। বছরের এ অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে বাউল শিল্পীরা মিলিত হন প্রাণের বন্ধনে।
অপরদিকে কবির স্মৃতিকে সংরক্ষণ করতে কবির বাড়ির দক্ষিণে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে পল্লী কবি জসীমউদ্দীন সংগ্রহশালা। ২০১১ সালের ২১ জানুয়ারি সংগ্রহশালা নির্মাণ কাজ শুরু হলেও আজও শেষ হয় নি। তাই সংগ্রহশালা নির্মাণে কাজটি দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে কবি ভক্তরা।
যদিও কবি পুত্র ড. জামাল আনোয়ার পল্লী কবি জসীমউদ্দীন সংগ্রহশালা অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করায় কবির বাড়ির নান্দনিকতা ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে দাবি করেন।
জামাল আনোয়ার বলেন, অপরিকল্পিতভাবে সংগ্রহশালা তৈরির কারণে এখন আর কবির বাড়ি থেকে খোলা মাঠ, আর রেল লাইন দেখা যায় না। তিনি নির্মাণাধীন সংগ্রহশালা বেশী উচু করায় কবির বাড়ি পানিতে ডুবে যাবে বলে অভিযোগ করেন।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক ও ফরিদপুর জসিম ফাউন্ডেশনের সভাপতি আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, মেলা অন্যান্য বছরের চেয়ে আরও বর্ণাঢ্য হবে। তিনি বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এ মেলার উদ্বোধন করবেন।
এদিকে, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও মেলায় পুতুলনাচ, চরকি, নাগরদোলাসহ জসিম মঞ্চে আয়োজিত গ্রামীণ ও সামাজিক জীবনের ওপর নানা পরিবেশনা পুলকিত করবে দর্শনার্থীদের এমনটিই প্রত্যাশা সকলের।
কেএফ