বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় অবাক লঙ্কান কোচ

টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ২৮০ রানের পুঁজি পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথম দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে খেলতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে অবশ্য আর বের হতে পারেনি নাজমুল শান্তর দল। তাইজুল ইসলামের ৪৭ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ১৮৯ রান তুলতে পেরেছিল স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ে নেমে লঙ্কানদের আবারও চেপে ধরেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা।

সেখান থেকে সফরকারীদের টেনে বের করেছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কামিন্দু মেন্ডিস। তাদের দুজনের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ৫১১ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় লঙ্কানরা। এত বড় লক্ষ্য তাড়ায় নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির, নাজমুল শান্ত এবং লিটন। যেখানে চার উইকেট পড়ার পরও ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলে আউট হয়েছেন উইকেটকিপার ব্যাটার লিটন।

৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্যে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকার বিকল্প ছিল না। অথচ সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে নাজমুল হোসেন শান্ত, জাকির হাসান, লিটন দাসরা কেবল এলেন আর গেলেন। ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারায়। চতুর্থ দিন সকালে প্রথম ঘণ্টায় ফিরে যান তাইজুল ইসলাম। দিনের প্রথম দুই ওভারে অবশ্য তাইজুলকে স্ট্রাইক দেননি মুমিনুল। তৃতীয় ওভারে ব্যাটিং পেয়ে কাসুন রাজিথার করা ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি ভুল লাইনে খেলে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান তাইজুল। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। দ্বিতীয় সেশনে ১৮২ রানে অল আউট হলো বাংলাদেশ। যার ফলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টটি টাইগাররা হেরেছে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে।

স্বাগতিকদের এমন লড়াইহীন ব্যাটিং দেখে অবাক শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ থিলিনা কান্দাম্বি। তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে এমন হয়। আজ দিনের শুরুতে পরিস্থিতি যেমন ছিল শেষে কিন্তু তা সম্পূর্ণ বদলে গেছে। ওরা আমাদের এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টি প্রত্যাশা করেনি। এটা হয়তো একটা কারণ। বাংলাদেশ সাধারণত লড়াই করে। সেদিক থেকে আমি একটু অবাক হয়েছি।’

২১১ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় দিন সকালে বিশ্ব ফার্নান্দোকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাটিং নামেন ধনাঞ্জয়া। উইকেটে বোলারদের জন্য সহায়তা থাকায় শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য তিনশর আশেপাশে লিড নেয়া। তবে ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দুর ব্যাটিংয়ে সেটা ছাড়িয়ে গেছে পাঁচশ। এদিকে পুরো ম্যাচে বল হাতে দারুণ ছিলেন লঙ্কান পেসাররা। ১৫ উইকেটের সবকটি নিয়েছেন কাসুন রাজিথা, ফার্নান্দো, লাহিরুরা। যে কারণে পেসারদের কৃতিত্ব দিচ্ছেন কান্দাম্বি।

লঙ্কান ব্যাটিং কোচ বলেন, ‘আমাদের একেবারে সহজ একটা পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আমরা কখনই ভাবিনি লিড পাঁচশর কাছে যাবে। আমাদের লক্ষ্য ছিল তিনশর আশেপাশে লিড নেয়া। কারণ আমরা ভেবেছি এটা আমাদের জয়ের জন্য যথেষ্ট হবে। আমাদের পেসারদের কৃতিত্ব দেয়া উচিত। আমরা এখন পর্যন্ত ১৫টি উইকেট নিয়েছি, সবগুলোই পেসাররা নিয়েছে।’

ম্যাচের আগের দিন চান্ডিকা হাথুরুসিংহে জানিয়েছিলেন, পেসারদের সঙ্গে উইকেটে সহায়তা থাকবে ব্যাটারদেরও। শ্রীলঙ্কার দিকে তাকালে অন্তত সেটা স্পষ্ট। দুই ইনিংস মিলে কামিন্দু এবং ধনাঞ্জয়া মিলে চারটি সেঞ্চুরি করেছেন। যেখানে বাংলাদেশের কোন ব্যাটার হাফ সেঞ্চুরিই পাননি। কান্দাম্বি মনে করেন, চারটি সেঞ্চুরিই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। লঙ্কান ব্যাটিং কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, ওই চারটা সেঞ্চুুরিই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.