নতুন মুদ্রানীতি পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে – ডিএসই চেয়ারম্যান

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের ঘোষিত মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সমর্থনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণ তথা সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু৷

আজ (১৮ জুন) ২০২৩ অর্থবছরের (জুলাই,২৩-ডিসেম্বর,২৩) প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঘোষিত মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সহ সামগ্রিক মার্কেট ইকোনমিক স্থিতিশীতার মাধ্যমে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জনের বিষয়ে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে৷ যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য সময়োপোগী ও দিক-নির্দেশনা মূলক মুদ্রানীতি।

বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ উত্তোরনে পুঁজিবাজারে পর্যাপ্ত তারল্য নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্রাংক ও স্টক ডিলারদের দেয়া ব্যাংকের শ্রেণীবদ্ধ ঋণের ক্ষেত্রে সংরক্ষিত প্রভিশন ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করেছে। এছাড়াও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ না নিয়ে বন্ড ইস্যু করে অর্থের সংস্থান করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সমর্থন পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণ তথা সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়৷ ঘোষিত মূদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারকে গুরুত্বারোপ করায় বাংলাদেশ ব্যাংককে আন্তরিক অভিনন্দন জানান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু৷

তিনি বলেন, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে একটি উন্নত ও বিকশিত পুঁজিবাজার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখিত হয়েছে। উন্নত ও বিকশিত পুঁজিবাজারের অভাবে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ ব্যাংকের অর্থায়নের উপর নির্ভরশীল হতে হয়। বন্ড মার্কেট এই বৃহত অর্থায়নের চাহিদা পূরণ করতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি খাত বন্ডের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে তাদের ব্যয় কমাতে পারে এবং পারিচালনাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে। এছাড়াও সরকার বন্ড-এর মাধ্যমে কম খরচে বাজেটের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে পারে৷

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে সেকেন্ডারি মার্কেটে বন্ডের ট্রেড সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে মার্কেট ইনফ্রাস্টাকচার মডিউল প্লাটফর্ম ব্যবহার করার জন্য গাইডলাইন প্রনণন করেছে৷ এছাড়া ব্যাংকিং কোম্পনি অ্যাক্ট ১৯৯১-এর সংশোধন অনুমোদনের জন্য জাতীয় সংসদে রয়েছে৷ যা বাস্তবায়িত হলে পুঁজিবাজার উন্নয়নে সহায়ক হবে৷ বিএসইসি বাজারের প্রবৃদ্ধির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে এবং এজন্য কিছু নীতিগত ব্যবস্থা নিয়েছে৷ এর মধ্যে অন্যতম হলো: মিউচ্যুয়াল ফান্ড, (স্পেশাল ফান্ড যেমন পেনশন ফান্ড ব্যাতিত) এর বিনিয়োগ সীমা বৃদ্ধি করা৷ বিএসইসি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য ন্যূনতম বিনিয়োগের সীমা ৬০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশে বৃদ্ধি করেছে৷ একটি শক্তিশালী ও গতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি এবং সরকারী কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ৷ ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের এই আশাবাদের সাথে ডিএসই একমত পোষণ করে পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই একযোগে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন৷

তিনি আরও মনে করেন, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদে অর্থায়ন  নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বরোপ করা হয়েছে৷ পাশাপাশি একটি কার্যকর বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠিত করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে৷ এ দুটো বিষয়ের ওপর ডিএসইও দেশের নীতি নির্ধারকগণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে৷ ডিএসই মনে করে এ দুটো উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে গেলে যথাযথ কৌশল প্রণয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷

পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশে সারা বিশ্বে নীতি-সমর্থন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে বলিষ্ঠ ভূমিকা থাকে, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সে ধরণের ভূমিকাই রয়েছে৷ এই মুদ্রানীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি পুঁজিবাজারকে প্রাধান্য দেয়ার জন্য পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানান৷

 

অর্থসূচক/এমআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.