বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) প্রতিনিধিদল একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩ টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিসিআই’র সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরীর (পারভেজ) নেতৃত্বে সৌজন্য সাক্ষাতটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বিসিআই পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ হতে বিসিআই’র ‘আমার পণ্য আমার দেশ’ লোগো সম্বলিত একটি ফ্রেম উপহার দেওয়া হয়।

সাক্ষাতকালে বিসিআই সভাপতি বলেন, বিসিআই সমগ্র বাংলাদেশ ভিত্তিক একক এবং একমাত্র জাতীয় শিল্পচেম্বার বিসিআই স্থানীয় সকল শিল্পের উন্নয়নের পথে সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা নিরসনে কাজ করে চলেছে। শিল্প মালিকরা অনেক সময় অনেক পত্র-পত্রিকা সহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভূল তথ্য পেয়ে থাকে যার ফলে অনেক সময় অনেকে ঘাবড়ে যান। আমরা আজ আপনার কাছে কিছু বিষয়ের সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়ার জন্য এসেছি। দেশে বর্তমানে উচ্চ মূদ্রাস্ফীতির কারনে সব প্রতিষ্ঠানের সেলস ড্রপ করেছে, ঋনের উচ্চ সূদ হার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সবকিছু মিলিয়ে কোন প্রতিষ্ঠান তার পূর্ণ সক্ষমতায় চলতে পারছে না। ঋনের উচ্চ সুদের সাথে সাথে ব্যাংক সমূহ বন্ডে বিনিয়োগের দিকে ঝুকে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের টিকে থাকাই এখন চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং তারা টাকার অবমূল্যায়নকেও আমলে নিচ্ছে না। আমার মনে হয় এটা আগের মত রাখা উচিত। আমরা ঋণ ক্লাসিফাইডের ক্ষেত্রে (এসএমএ) ৩ মাসে না এনে ৬ মাস রাখার প্রস্তাব করছি। প্রছন্ন রপ্তানির ক্ষেত্রে দেখা যায় এক্সসেপটেন্স পেতে এবং এলসি ম্যাচিউইর হতে ৪-৫ সপ্তাহ লেগে যায় যার ফলে তাদের লায়াবিলিটি বেড়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি প্রচ্ছন্ন রপ্তানির ক্ষেত্রেও একটি নিদের্শনা থাকা জরুরী যে, স্বাভাবিক রপ্তানির মতই প্রচ্ছন্ন রপ্তানির ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিসিআই’র পরিচালকদের বক্তব্য ধৈর্য্য সহকারে শোনেন এবং বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মূদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য বিকল্প সকল পদ্ধতি প্রয়োগ করেছে কিন্তু মূদ্রাস্ফীতি কমেনি এর পরে আমরা মূদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য ব্যাংক ঋণ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা আশা করি খুব দ্রুত মূদ্রাস্ফীতি কমে আসবে কারণ আমাদের এখন প্রধান কাজ মূদ্রাস্ফীতি কমানো। ঋণপত্র খোলার বিষয়ে বলতে চাই আমরা কোন ব্যাংকে ঋণপত্র খুলতে না করিনি এবং এখন প্রতি দিন ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার দুইশত ঋণপত্র খোলা হচ্ছে। আমরা কঠোর হাতে ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ করার চেষ্টা করছি। আমরা আশা করি জানুয়ারি ২০২৫ থেকে আর ডলারের স্বল্পতা থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, এসএমই খাতের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার ফান্ড রয়েছে যেখান থেকে ৭% হারে এবং নারী উদ্যোক্তরা ৫% হারে ঋণ নিতে পারে। আমরা জানি আপনাদের কষ্ট হচ্ছে, আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে খাদ্য পণ্য, সার, জ্বালানি আমদানি’র পরে অন্য কিছু। অগ্রিম ডলার বুকিং এর বিষয়ে ভূলভাবে সংবাদ এসেছির আমরা পরবর্র্তিতে এর ব্যাখ্য প্রদান করেছি। এটা ৫% সুদে ৩মাস মেয়াদে বুকিং দিতে হবে সেক্ষেত্রে ১.৭৫% সুদ হবে।

সভায় বিসিআই’র উর্দ্ধতন সহ-সভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইউনুস, পবিচালকবর্গ- রঞ্জন চৌধুরী, ড. দেলোয়ার হোসেন রাজা, আবুল কালম ভ্ইূয়া, জিয়া হায়দার মিঠু, মিজানুর রহমান, রুসলান নাসির, সোহানা রউফ চৌধুরী, মো: সেলিম জাহান, মো: মাহফুজুর রহমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মোঃ নাসের ও নুরুন নাহার এবং বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের পরিচালক মোঃ সারোয়ার হোসেন উপস্থিত থেকে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। পরিশেষে সকলের বক্তব্য ধৈর্য্য সহকারে শোনের এবং বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য গভর্নর মহোদয়কে বিসআিই সভাপতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.