ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন লিজ ট্রাস

লিজ ট্রাস ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন৷ সোমবার তিনি কনজারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন৷ ফলে তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মঙ্গলবার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ৪৭ বছর বয়সি ট্রাস৷

বেশ কিছু কেলেঙ্কারির কারণে গত জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হন বরিস জনসন৷ এরপরই কনজারভেটিভ দলের নতুন প্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ শুক্রবার পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে৷ ভোটার ছিলেন কনজারভেটিভ দলের প্রায় দুই লাখ সদস্য৷

ভোটে ট্রাস সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে পরাজিত করেন৷ সুনাক জিততে পারলে ব্রিটেনের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী হতেন৷ মোট ভোট পড়েছে ৮২.৬ শতাংশ৷ ট্রাস পেয়েছেন ৮১৩২৬ ভোট (৫৭.৪ শতাংশ)৷ সুনাক পেয়েছেন ৬০৩৯৯টি (৪২.৬ শতাংশ)৷

২০১৯ সালে ৬৬.৪ শতাংশ ভোট পেয়ে কনজারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন বরিস জনসন৷ ২০০৫ সালে ডেভিড ক্যামেরন পেয়েছিলেন ৬৭.৬ শতাংশ ভোট৷ আর ২০০১ সালে ডানকান স্মিথ পেয়েছিলেন ৬০.৭ শতাংশ ভোট৷ লিজ ট্রাস ও ৪২ বছর বয়সি সুনাক উভয়ই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী৷

মূল্যস্ফীতির হাত থেকে সাধারণ নাগরিকদের রক্ষা এবং কনজারভেটিভ দলের মধ্যে ঐক্য ফিরিয়ে আনা ট্রাসের অন্যতম দুটি মূল কাজ হতে চলেছে৷ গত জুলাই মাসে ব্রিটেনে মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশে উপরে উঠে গিয়েছিল৷

বামপন্থি পরিবারে জন্ম নেওয়া ট্রাস প্রথমে লিবারেল ডেমোক্র্যাট ছিলেন৷ তবে ২০১০ সালে তিনি কনজারভেটিভ পার্টি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন৷ ট্রাস ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ছিলেন৷ তবে ব্রিটিশরা ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিলে তিনি দ্রুতই ব্রেক্সিটের কট্টর সমর্থক হয়ে উঠেছিলেন৷ এরপর ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন লিজ ট্রাসকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে গড়া প্রতিনিধি দলের প্রধান করেছিলেন৷ গতবছর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ট্রাস৷

লিজ ট্রাস যেসব পোশাক পরেন এবং ছবি তোলার জন্য যেসব জায়গা বেছে নেন, যেমন এস্তোনিয়ায় গিয়ে ট্যাঙ্কে এবং মস্কোয় গিয়ে পশমের টুপি পরে ছবি তোলা, ইত্যাদি কারণে অনেকে তাকে প্রথম নারী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের সঙ্গে তুলনা করেন৷ ইউক্রেন ইস্যুতে তিনি রাশিয়ার কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত৷

অপরদিকে, ভারতীয় অভিবাসীর ঘরে জন্মগ্রহণ করা সুনাকের মা-বাবার একজন চিকিৎসক, অন্যজন ফার্মাসিস্ট৷ তিনি সরকারি স্কুলে না গিয়ে বেসরকারি অভিজাত স্কুলে পড়াশোনা করেছেন৷ এরপর অক্সফোর্ডে পড়েছেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ডে পড়তে গিয়ে সুনাক তার ভবিষ্যৎ স্ত্রীর সঙ্গে পরিচিত হন৷ সুনাকের শ্বশুর ভারতীয় প্রযুক্তি জায়ান্ট ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা৷

২০১৫ সালে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন সুনাক৷ অর্থমন্ত্রী থাকা অবস্থায় বিভিন্ন কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে জনসনের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি৷ জনসনের পদত্যাগের পেছনে সুনাকের ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ আছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.