আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিতর্ক জেরে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে সংঘাতের সময় থেকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিতর্ক শুরু হয়েছিল দেশটির প্রধানমন্ত্রীর। তারই জেরে রোববার আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্টের ওয়েবসাইটে বিবৃতি দিয়ে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরমেন সারকিসিয়ান।

তিনি জানিয়েছেন, আর্মেনিয়ায় প্রেসিডেন্টের কোনো ক্ষমতা নেই। তার কথা শোনাও হয় না। সে কারণেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। বস্তুত, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কথা না লিখলেও, বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী পাসিনইয়ানের সঙ্গে বিতর্ক চলছে প্রেসিডেন্টের।

কিছুদিন আগেই নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে তীব্র সংঘাত হয়েছে আর্মেনিয়ার। আজারি সেনা একের পর এক এলাকা দখল করেছে। যুদ্ধে কার্যত পর্যদস্তু হয়েছে আর্মেনিয়া। এরপরেই রাশিয়ার মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি সই হয়। সেখানে স্টেটাস কো বা স্থিতাবস্থা রক্ষার আপস মীমাংসা হয়। আর্মেনিয়ার অধিকাংশ মানুষের বক্তব্য, ওই চুক্তির মাধ্যমে নাগর্নো-কারাবাখ কার্যত আজারবাইজানের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রায় প্রতিদিন আর্মেনিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়।

প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ওই বৈঠকে তাকে ডাকা হয়নি। এতবড় চুক্তিপত্রের কথা তাকে আগে জানানোও হয়নি। এর থেকেই প্রমাণিত হয়, তার কোনো ক্ষমতা নেই। এখানেই শেষ নয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার ঠিক পর পরই দেশটির প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর প্রধানকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্ট তার বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের কথা শোনেননি।

এই সমস্ত বিষয়গুলো উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে আর ক্ষমতায় থাকতে চান না। কারণ, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার কোনো দাম নেই।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গোটা দেশজুড়ে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।

২০১৮ সালে আর্মেনিয়ার পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে সার্কসিয়ান দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং সংবিধান অনুযায়ী তার ২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই তিনি সরে দাঁড়ালেন। আর্মেনিয়ার গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং প্রেসিডেন্টের পদটি অনেকটা আলঙ্কারিক। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.