তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিশেষ নীরিক্ষায় চমকপ্রদ তথ্য বের হচ্ছে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে অডিটের পাশাপাশি বিরতণকৃত লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড সঠিকভাবে বন্টন করা হয়েছে কিন্তু খাতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ নীরিক্ষার মাধ্যমে চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনের মাল্টি পারপাস হলে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিষ্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) নতুন কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, ড. মিজানুর রহমান, মো. আবদুল হালিম, ড. রুমানা ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, রেজাউল করিম, সিএমজেএফের বিদায় সভাপতি জিয়াউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিতে অবদান বাড়াতে বিএসইসির সাথে কাজ করার অঙ্গীকার করেন সিএমজেএফের নতুন নেতৃত্ব।  লোকবলের অভাব থাকার পরও নিয়মিত বিভিন্ন কোম্পানিগুলোতে অডিট কার্যক্রম চালানোর কথা জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, গেল তিন দশকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো তাদের ঘোষিত লভ্যাংশ ঠিকভাবে বিতরণ করেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেকোনো অনিয়ম পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার কথাও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আমরা আপনাদের সবদিক থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। সিএমজেএফের কাজকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায় সেগুলোর ব্যাপারে কোনো সহযোগিতার হাত বাড়াতে হলে আমরা তা চেষ্টা করব। আপনারা অনুসন্ধানি হলে আমাদেরই লাভ।

বিএসইসিতে সাংবাদিক প্রবেশাধিকারে বাধার বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অন্যান্য দেশের সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জে কেউ ঢুকতে পারে কি না দেখবেন। আমরা কমিশন আসার পর থেকেই আপনাদেরকে (সাংবাদিক) আমাদের চোখ কান নাক হিসেবে দেখি। আপনাদের বন্ধু ভাবি আমরা। আপনারা যেন ভালো করতে পারেন এগুলো আমরা সব দেখছি। দেশ বিদেশে ঘুরে আপনাদের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা এগুলোও আমরা করছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো বিষয়ের উদ্বেগ হলে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বিএসইসি জানিয়ে দেয়। তারপর ফেসবুক পেজে আমরা তাৎক্ষণিক সবকিছু জানিয়ে দিই৷ আমরা ডিজিটালাইজেশনে অনেক জোর দিয়েছি।

তিনি বলেন, এছাড়া আমরা আরও অনেক ধরনের কাজ করছি। চেষ্টা করবেন তথ্যগুলো এমনভাবে প্রকাশ করবেন যেন মার্কেটটাকে স্টেবল রাখতে পারে। মার্কেট যেন পজিটিভ রাখে। মার্কেটের ওপর প্রভাব ফেলে এমন কিছু করবেন না। আপনারা সাংবাদিকরা ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করে আসছেন।

বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, সিএমজেএফের সাথে আমাদের সম্পর্ক অনেক গাঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ। সিএমজেএফ আজকের আজকে যে অবস্থা এতে বিএসইসির ভূমিকা রয়েছে। আমরা সব সময় সিএমজেএফের প্লাটফর্মের জন্য কাজ করেছি।

তিনি বলেন, আমরা চাই গঠনমূলক সাংবাদিকতা। আমরা এমন কোনো নিউজ করব না যেটাতে পুঁজিবাজারের ক্ষতি হয়। ৭৮টা কোম্পানি যে জেড ক্যাটাগরিতে চলে যাচ্ছে এটা একটা গুজব। এটা আসলেই যাচ্ছে কি না এটা জেনেশুনে নিউজ করতে হবে। আপনাদের লেখনি যেন বিবেচনা প্রসূত হয় এগুলো খেয়াল রাখতে হবে। একটা নিউজ পেলেই করে দিলাম এতে মার্কেটের ওপর কী প্রভাব পড়বে এগুলো খেয়াল রাখতে হবে। সমালোচনা অবশ্যই হবে তবে সেটা যেন অবশ্যই গঠনমূলক ও বাস্তবিক হয়। আপনাদের লেখনির ধার অনেক বেশি। সেটা যেন মানুষের কষ্টের কারণ না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সিএমজেএফের বিদায়ী কমিটির সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, এটি খুবই ভালো লাগার একটি দিন। খুব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন হয়েছে। সিএমজেএফে ইন্টারনাল অডিট হয়। এর মাধ্যমে আমরা গুড গভর্নেন্স পালন করে থাকি। সিএমজেএফের কাজ হল কীভাবে সাংবাদিকদের আরও ভালো প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তা নিশ্চিত করা। সিএমজেএফ নানামুখী প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সাংবাদিকদের। তথ্যের অবাধ প্রবাহ কীভাবে বাড়ানো যায় এ বিষয়ে বিএসইসির কাছে আমরা পাশে চাই। আমাদের সদস্যদের যেন বিএসইসিতে এক্সেস আরও ভালো হয় এটাও অনুরোধ করব।

সিএমজেএফের সভাপতি গোলাম সামদানী ভূইয়া বলেন, সঠিক নিউজের জন্য প্রয়োজন সঠিক তথ্য। সাংবাদিকরা বলেছেন আমরা বিএসইসিতে প্রবেশ করতে পারছি না। আমরা সাংবাদিকরা যেন নির্বিঘ্নে বিএসইসি প্রবেশ করতে পারি এই সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন, কমিশনে প্রবেশ করে কেউ যেন তথ্য পেতে বাধা না পায় এ বিষয়ে আমরা সহযোগিতা চাই। কেউ তথ্য দিতে না চাইলে এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে বিএসইসিতে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার অবাধ করতে হবে।

 

অর্থসূচক/এমআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.