‘দুদক কর্মকর্তা কারও ব্যাংক হিসাব জব্দে নির্দেশ দিতে পারেন না’

কোনো নাগরিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার সিনিয়র স্পেশাল আদালত বা স্পেশাল জজ আদালতের। এ ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন ছাড়া দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা তার ইচ্ছা অনুযায়ী কোনো নাগরিকের ব্যাংক হিসাব জব্দে নির্দেশ দিতে পারেন না।

কক্সবাজারের এক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কর্মকর্তার দেওয়া নির্দেশ আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করে এ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ রোববার (২৭ জুন) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

দুদকের চট্টগ্রাম-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের কক্সবাজার শাখার ব্যবস্থাপককে বেলায়েত হোসেন নামের এক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ফার্মেসি ব্যবসায়ী বেলায়েত কক্সবাজারের বাসিন্দা।

ব্যাংক হিসাব জব্দের ওই নির্দেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেলায়েত হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। ২৩ জুন রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায়ের জন্য ২৭ জুন তারিখ ধার্য করেন। সে অনুসারে আজ রায় দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের রুলে বেলায়েতের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে দুদকের ওই উপ-সহকারী পরিচালকের দেওয়া ৬ জানুয়ারির নির্দেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

দুদক চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কক্সবাজার শাখার ব্যবস্থাপককে তিন সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এই রুল যথাযথ ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হলো।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাকিবুল হাসান। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

রায়ের পর আইনজীবী রাকিবুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আইন অনুসারে কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে আদালতের আদেশে কোনো ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা যাবে। তবে বেলায়েতের ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটেছে। তাই তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার নির্দেশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.