প্লাস্টিক খাতে কর অবকাশ সুবিধা চেয়েছে বিপিজিএমইএ

বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) প্লাস্টি শিল্প খাতে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি উৎসে আয়করের হার ০.২৫ শতাংশ এবং করপোরেট কর ৩২.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ রোববার (৭ জুন) আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। রাজধানীর পুরানা পল্টনে অবস্থিত নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বাক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি সামিম আহমেদ। এ সময় সংগঠনের সাবেক সভাপতি  এ এস এম কামাল উদ্দিন, সাবেক সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহেদ, বর্তমান সিনিয়র সহ -ভাপতি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিপিজিএমইএর অন্যান্য দাবি হচ্ছে- ক্রোকারিজ (প্লাস্টিকের তৈজসপত্র) ও প্লাস্টিক খেলনা আইটেমের উপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার, ফিলার মাষ্টার ব্যাচ ও কালার মাষ্টার ব্যাচের শুল্কহার ১০% হতে কমিয়ে ৫%, এ্যালু এ্যালু বটম ফয়েল ও এ্যালুমেনিয়াম ব্লিষ্টার ফয়েল এর বর্তমান শুল্কহার ৫% হতে কমিয়ে ১% করা।

অন্যান্য দাবীর মধ্যে রয়েছে :
ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের উদীয়মান খেলনা প্রস্তুতকারীদের ব্যবহার্য্য উপকরণ আমদানীতে শুল্ক রেয়াতী সুবিধা দিয়ে ঝজঙ-১১৯ জারী করায় বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। খেলনার জরুরী ব্যবহার্য্য ২৮টি উপকরণের জন্য কর ছাড় চাওয়া হলেও মাত্র ১৩টি উপকরণের উপর রেয়াতী সুবিধা দেয়া হয়েছে। কিন্তু জারীকৃত ঝজঙ-১১৯ ভুল ভ্রান্তি ও কিছু কিছু অসঙ্গতির জন্য ঝজঙ টি সংশোধনপূর্বক নতুন ঝজঙ জারীর জন্য ঘইজ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি। উদীয়মান খেলনা প্রস্তুতকারীদের অর্থাৎ দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা বর্তমান সরকারের নীতি। যেহেতু দেশীয় খেলনা অত্যন্ত উন্নতমানের এবং আমদানী বিকল্প কাজেই তৈরী খেলনা আমাদানীতে ট্যারিফ মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবটি পূনঃ বিবেচনার জন্য অনুরোধ করছি।

ব্যবসায়িদের উপর টার্নওভার ভিত্তিক ধার্য্যকৃত আয়কর ০.৫% এর পরিবর্তে ০.২৫% করা হয়েছে। চুড়ান্ত আয়করের হিসাব এটি সমন্বয় করার প্রস্তাব করছি।
৩ শতাংশ আগাম কর হতে অব্যাহতি ঃ ঈড়ারফ-১৯ পরিস্থিতিতে প্লাস্টিক সেক্টরের অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও রুগ্ন শিল্পের তালিকাভুক্ত। শ্রমঘণ শিল্প হতে হাজার হাজার নারী/পুরুষ কর্মচারী ও কর্মকর্তা বেকার হয়েছেন। এসমস্ত শিল্পের ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। রপ্তানীতে সম্পৃক্ত অনেক প্রতিষ্ঠান রুগ্ন শিল্প হিসাবে তালিকাভ্ক্তু হচ্ছে। এমতাবস্থায়, ২০২১-২০২২ প্রস্তাবিত বাজেটে প্লাস্টিক শিল্পের উপর আরোপিত ৩ শতাংশ আগাম কর (অফাধহপব ঞধী) মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মত। অন্যান্য সেক্টরকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অগ্রিম কর প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কাজেই ঈড়ারফ-১৯ ক্ষতিগ্রস্থ প্লাস্টিক শিল্প হতে প্রস্তাবিত ৩ শতাংশ আগাম কর অব্যাহতি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

টার্ণওভারের উর্দ্ধসীমা ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা (১.৫ কোটি টাকার টার্নওভার অপ্রতুল ও বাস্তব সম্মত নয়) থেকে ৫ কোটি নির্ধারণ করে করের হার প্রস্তাবিত ৪% হতে ৩% নামিয়ে আনার অনুরোধ জানাচ্ছি।

ভ্যাট, আয়কর এবং পলিসি সংক্রান্ত যে প্রস্তাবনা এফবিসিসিআই রেখেছে সেসব প্রস্তাবের প্রতি আমরা সহমত পোষন করি এবং তার বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করি।

প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঃ চষধংঃরপ এবং চড়ষষঁঃরড়হ এই শব্দ দুটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এটা আমাদের মত দেশে বেশি প্রযোজ্য। ১৯৫০ সালে প্লাস্টিক ম্যাটেরিয়ালস এর উৎপাদন ছিল দেড় লক্ষ মিলিয়ন টন। বর্তমানে উৎপাদন ৪০০ মিলিয়ন টনের মত এবং ২০৫০ সাল নাগাদ উৎপাদন হবে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন টন। প্লাস্টিক এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য যথেষ্ট উদ্যোগ আমরা বাজেটে দেখিনা। আধুনিক শহর এবং জন জীবনের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত প্রয়োজন এবং বাজেটে তার প্রতিফলন থাকতে হবে।

বিপিজিএমই সভাপতি সরকারের স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় স্বার্থে বাজেট বাস্তবায়নে অধিকতর দক্ষতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.